কলকাতা : কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ থেকে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একাধিক মামলা সরানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে। অনেকেই বলছেন, নিয়োগ মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হতে পারে অনিশ্চয়তা। হতাশ হয়ে পড়েছেন চাকরি প্রার্থীদের একটা বড় অংশ। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নিজে বলেছেন, তিনি যে কাজ ৬ মাসে করতেন, সেই কাজ করতে ৬০ বছরও লেগে যেতে পারে। প্রশ্ন উঠছে, বেঞ্চ বদলে কি সত্যিই ধাক্কা খেতে পারে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত? তেমনটা মনে করছেন না কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত। তাঁর মতে, সব বিচারপতিই সমান। ফলে মামলায় প্রভাব পড়ার কোনও প্রশ্ন থাকছে না।
অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আদালতের কর্মপদ্ধতির দুটো ভাগ রয়েছে। বিচারবিভাগ ও প্রশাসনিক দিক। বিচারবিভাগীয় ক্ষেত্রে যদি কোনও আবেদন সুপ্রিম কোর্টে যায়, তাতে হাইকোর্টের নির্দেশকেও পাল্টে দিতে পারে শীর্ষ আদালত।’ এ ক্ষেত্রে সাক্ষাৎকারের বিষয়টিতেই সুপ্রিম কোর্ট গুরুত্ব দিয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এক্ষেত্রে হাইকোর্টের নির্দেশে কোনও স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়নি। তবে বিচারাধীন মামলা নিয়ে যদি বিচারপতি বাইরে কোনও পর্যবেক্ষণ দেন, তাতে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা থাকে। এ ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট হয়ত এমন কোনও প্রসঙ্গই পেয়েছেন, যার জন্য মামলা সরানো হয়েছে।’ এতে রাজনীতির প্রভাব নেই বলেই মনে করছেন তিনি।
অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত বলেন, ‘আইনের মূল কথাই হল ধর্ম বা বিচার। প্রত্যেক বিচারপতি সেটা মাথায় রেখেই বিচার করেন। কোন বিচারপতি মামলা শুনলেন, এটা নিয়ে কোনও ভাবনা চিন্তার জায়গা নেই। সব বিচারপতিই সমান। বিচারের পদ্ধতি আলাদা। তাই চাকরিপ্রার্থীরা আশ্বস্ত হতে পারেন।’
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বারবার বলেছেন, তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন, আগামিদিনেও হবেন। এই প্রসঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিচারকদের কাজই ন্যয়বিচার দেওয়া। এটা দুর্নীতির বিপরীত শব্দ। প্রত্যেক বিচারপতিই সেটা মাথায় রেখে ন্যয়বিচার করে থাকেন।’
উল্লেখ্য, টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের অনুবাদ এবং বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পাঠানো নোট খতিয়ে দেখেই শুক্রবারই মামলা সরানোর নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি পিএস নরসীমার বেঞ্চ।