কলকাতা: দেবাঞ্জন দেব, এই একটাই নাম বিগত কয়েকদিন ধরে নাড়িয়ে রেখেছে গোটা রাজ্যবাসীকে। ভুয়ো আইএএস গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই তাঁর বিষয়ে একের পর এক এমন তথ্য উঠে আসছে, যা দেখে হাড় হিম হয়ে যাচ্ছে দুঁদে পুলিশ আধিকারিকদেরও। ধীরে ধীরে নিজেকে ভেকধারী আইএএস গড়ে তোলার তাঁর গল্প হার মানাচ্ছে ক্রাইম থ্রিলারকে। দেবাঞ্জনের কৃতকর্মে লজ্জিত তাঁর শিক্ষকেরাও। কিন্তু, ছোটবেলায় পড়াশোনায় কেমন ছিল দেবাঞ্জন? সেই কৌতূহল মেটাতে ভুয়ো টিকা-কাণ্ডের মূল অভিযুক্তের মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্ট খুঁজে বের করেছে TV9 বাংলা।
ছেলেবেলায় টাকি বয়েজ় স্কুলে পড়তো দেবাঞ্জন। সোমবার তাঁর দুই পরীক্ষার ফলাফল থেকেই স্পষ্ট, খুব একটা উচ্চমেধার পড়ুয়া ছিল না দেবাঞ্জন। মধ্যমেধার ছেলের বাবা সর্বদাই স্বপ্ন দেখতেন, ছেলে বড় হয়ে আইএস অফিসার হবে। সেই জন্যই একবার ইউপিএসসি পরীক্ষাতেও বসে সে। কিন্তু, প্রথম চেষ্টায় প্রিলিমিনারি পরীক্ষাতেও পাস করতে পারেনি। যদিও বাড়িতে বিষয়টি না জানিয়ে আইএএস সেজে দেবাঞ্জন বাড়িতে এমন ভাব করা শুরু করে, যে সে আইএএস অফিসার হয়ে গিয়েছে। সূত্রের খবর, গত বছর দেবাঞ্জনের বাবা জানতে পারেন, ছেলে আইএএস নয়। কিন্তু তারপরও তিনি বিষয়গুলি নিয়ে খুব একটা মুখ খোলেননি।
টাকি বয়েজ় স্কুল থেকে পাওয়া নথিতে দেখা যাচ্ছে, ২০০৯ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল দেবাঞ্জন। মোট ৮ টি প্রশ্নপত্র মিলিয়ে মোট ৫৬১ নম্বর পেয়েছিল দেবাঞ্জন। মোট নম্বরের উপর প্রাপ্ত হার ছিল ৭০ শতাংশ। বাংলায় দুই পেপারে ২০০ নম্বরের মধ্যে ১৩১, ইংরেজিতে ৭৬, অঙ্কে ৭০, ভৌত বিজ্ঞানে ৮৭ নম্বর পেয়েছিলেন দেবাঞ্জন। এর পাশাপাশি জীবন বিজ্ঞানে ৬৭, ইতিহাসে ৫৫ এবং ভূগোলে ৭৫ নম্বর পেয়েছিল সে।
আরও পড়ুন: ‘জঙ্গিদের থেকেও ভয়ঙ্কর’ দেবাঞ্জন, প্রথমবার মুখ খুললেন মমতা
দেবাঞ্জনের উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্টও উঠে এসেছে TV9 বাংলার হাতে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, মাধ্যমিকের তুলনায় কিছুটা হলে উচ্চ মাধ্যমিকে খারাপ ফল হয়েছিল তাঁর। পরিবেশ বিজ্ঞান মিলিয়ে মোট ৭ টি বিষয়ের মধ্যে সেরা ৫ টি বিষয় মিলিয়ে দেবাঞ্জন পেয়েছিল ২৮৪। শতকরা প্রাপ্ত হার ছিল ৫৬.৮ শতাংশ। উচ্চ মাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বরগুলির মধ্যে সর্বনিম্ন নম্বর ছিল রসায়নে (৪৪)। এ বাদে সেরা ৫ টি বিষয়ের মধ্যে দেবাঞ্জন বাংলায় পায় ৫২, ইংরেজিতে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৬৩, পদার্থবিদ্যায় ৫৪, অঙ্কে ৫০ এবং জীববিদ্যায় ৬৫।
আরও পড়ুন: দেবাঞ্জনের পর শহরে আরও এক ‘ভুয়ো’ মুখ্যসচিব, আরও এক নীলবাতি গাড়ি