কলকাতা: সিবিআই বাড়ি থেকে বেরতেই রবিবার খোশমেজাজে দেখা গিয়েছিল তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রকে। কিন্তু সেদিন একেবারে উল্টো চিত্র ধরা পড়েছিল কলকাতা পুরসভার মেয়র তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের ক্ষেত্রে। তাঁর বাড়িতেই রবিবার কার্যত একই সময়ে চলেছিল তল্লাশি। দিনভর তল্লাশি শেষে সিবিআই বেরিয়ে যেতে মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন ফিরহাদ। এই তল্লাশি নিয়ে কার্যত ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। তাঁকে হেনস্থার অভিযোগ তোলেন। আদৌ তাঁর বাড়ি থেকে তল্লাশিতে কী উদ্ধার হয়েছে, তা নিয়ে রবিবার রাত পর্যন্তও কিছু খোলসা হয়নি। সোমবার সকালে পৌরসভার বাইরে নিজেই তা খোলসা করলেন মেয়র ফিরহাদ।
TV9 বাংলার এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে ফিরহাদ নিজেই জানালেন রবিবারের ‘সিবিআই-সার্চিং’ প্রসঙ্গে। মন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়, ‘আপনাকে কী নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হল? ‘ ফিরহাদ বলেন, “আমায় কালকে সত্যি বলতে কিছু জিজ্ঞাসাবাদই করেনি। এসে সার্চ-টার্চ সবই করেছে। কিন্তু কোনও জিজ্ঞাসাবাদ হয়নি। খুব ভালো ভাবে সবাই মিলে বসে চা খেলাম।” তবে তিনি এটাও স্পষ্ট করলেন, “মনে হয়, ওঁদের দাদারা, যাঁরা দিল্লিতে রয়েছেন, তাঁরা বলেছেন একটা কেস সাজাও। না হলে আবারও বিচারপতি সিনহার কাছে ঝাড় খেতে হবে। তাই কিছু একটা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
তল্লাশিতে কি মেয়র কথা মন্ত্রীর বাড়ি থেকে কিছু উদ্ধার হয়েছে? ফিরহাদের সোজাসাপটা উত্তর, “এগুলো সবই বানানো হচ্ছে। অফিসে বসে দিল্লি থেকে নির্দেশ নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে। সেই তালিকায় আমাকে সই করালো না কেন? যদি আমার বাড়ি থেকেই কিছু উদ্ধার হয়ে থাকে, তাহলে তো তাতে আমার সই করাবেন, সেটা কোথায়?”
রবিবার ফিরহাদ হাকিমকে সাংবাদিকদের তরফ থেকে এই প্রশ্ন কার্যত করা হয়নি। তিনি নিজেই এতটাই ক্ষোভ প্রকাশ করেন, নিজেই প্রশ্ন তোলেন, “আমি কি চোর? কেন এই তল্লাশি?” ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সেই ফিরহাদ দৃশ্যত অনেক বেশি ‘কুল মেজাজে’।
সোমবারও সিবিআই পুরনিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রানাঘাটের বিজেপি বিধায়ক পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতেও হানা দিয়েছেন। তল্লাশি চলছে মধ্যমগ্রাম, উলুবেড়িয়া, ডায়মন্ড হারবারে তৃণমূলের বর্তমান ও প্রাক্তন কাউন্সিলরদের বাড়িতে। সেই তল্লাশি প্রসঙ্গে ফিরহাদ এদিন বলেন, “এটা দেখানো। পার্থবাবুরা তো ভয়ের চোটেই গিয়েছেন। সারেন্ডার করে দিয়েছেন। তবুও না দেখাতে পারলে, যেহেতু প্রাক্তন চেয়ারম্যান ছিলেন, তাতে কোর্টের রোষের মুখে পড়বে, তাই দেখানো দেখানো খেলা। গট আপ কেস।”