কলকাতা: TATAকে ‘টাটা’ বিশাল টাকার অঙ্ক গুনতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে। টাটাকে বিদায় করে যে সরকারের উত্থান, সেই সরকারই এবার বলছে, তাদের কাছে জমি রয়েছে, এবার বাংলাতেই হবে বিদ্যুৎচালিত গাড়ির কারখানা। মন্ত্রী বললেন, “জমি আছে, জমি আমরা দেব।” মঙ্গলবার সোনার বাংলায় ‘বেঙ্গল ন্যাশনাল চেম্বার কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’ নামে একটি অনুষ্ঠানে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বাংলায় এখন চলছে ‘বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট’। সে প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়েই ফিরহাদ হাকিম বলেন, “বিদ্যুৎ চালিত গাড়ি তৈরির জন্য বিদেশে সংস্থাদের আহ্বান জানানো হয়েছে। জমি রয়েছে, জমি আমরা দেব।”
৭ম বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার ইউকে দূতাবাসের প্রতিনিধিরা ও ইউকে সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী জানান, আরও বেশি করে মহিলাদের স্বনির্ভর গড়ে তুলতে অ্যাপ ক্যাপ চালকের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া ৩৫ জন মহিলাকে। রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ইউকের থেকে আসা বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের রাজ্যের বিনিয়োগ করার জন্য আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “ইলেকট্রিক্যাল গাড়ি আরও বেশি প্রয়োজন রয়েছে। তাই বিভিন্ন সংস্থা রাজ্যে ইলেকট্রিক্যাল গাড়ি তৈরি করতে এগিয়ে আসে। রাজ্য প্রয়োজনমতো জমি দিয়ে সাহায্য করবে।”
মন্ত্রী দাবি করেন, বাংলায় ব্যবসা করার মতো অনুকূল পরিস্থিতি রয়েছে। মন্ত্রী উচ্ছ্বসিত হয়ে বলেন, “আমি খুব উৎসাহিত। ইউকে থেকে প্রায় ৫৭ টা কোম্পানি এসেছে। তিন লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ আমরা আশা করছি।” নগরোন্নয়নের ক্ষেত্রে বিদেশি সংস্থাগুলি কী কী কাজ করে, তার ওপর বাংলার ফোকাস রয়েছে।
বাংলায় বিদ্যুৎচালিত গাড়ি, বাস চালানোর ওপর জোর দিচ্ছে সরকার। আর সেক্ষেত্রে সেই গাড়ি তৈরির কারখানাও গড়ার জন্য বিনিয়োগের আহ্বান করা হয়েছে। মন্ত্রীর কথায়, “আমাদের কাছে জায়গা আছে, আমরা জমি দেব।”
সিঙ্গুরে ‘ন্যানো প্ল্যান্ট’ বাস্তবায়িত হয়নি। যুগ পেরিয়ে সিঙ্গুরের জমি আন্দোলন এখন পাঠ্যবইয়ের পাতায়। যদিও সে আন্দোলনের মাশুল আজও পক্ষান্তরে গুনতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে। কারণ বাংলায় ন্যানো গাড়ি না বানাতে দেওয়ার খেসারত ৭৬৫ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা। সম্প্রতি বিশেষ ট্রাইব্যুনালের রায়ে সিঙ্গুরে টাটা মোটরসের কারখানা না হওয়ার জন্য টাটা গোষ্ঠীকে বিপুল অর্থ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যকে। সিঙ্গুরে কারখানা না হওয়ায় সুদ সহ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে WBIDC-কে।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, ২০০৬ সালে টাটার কারখানা তৈরির কথা ঘোষণা করে তৎকালীন রাজ্য সরকার যে স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছিল, বর্তমান রাজ্য সরকার সেই স্বপ্নই নতুন করে দেখছে। স্বপ্ন সেই গাড়ি তৈরিরই। বাংলার গাড়ির তৈরির কারখানাই গড়তে চাইছে মমতা সরকার। একটায় শুধু বিনিয়োগ ছিল, আর এখন বিনিয়োগের অপেক্ষা!