কলকাতা : তৃণমূল নেতাদের জেলে যাওয়ার উদাহরণ নতুন নয়। সারদা বা নারদ মামলাতেও জেলে যেতে হয়েছিল একাধিক নেতাকে। আর সম্প্রতি দুর্নীতির মামলায় জেলে রয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় ও বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তবে একাধিক নেতাই জেলের বদলে হাসপাতালে বেশি সময় কাটিয়েছেন বলে দাবি করে থাকেন বিরোধীরা। এবার ফিরহাদ হাকিম দাবি করলেন, তাঁকে যখন গ্রেফতার করা হয়েছিল, তখন তিনি হাসপাতালে যাননি, জেলেই ছিলেন। শাসক দলের নেতাদের বিরুদ্ধেই যখন এমন অভিযোগ রয়েছে, তখন ফিরহাদ তাঁর মন্তব্যে কী বোঝাতে চাইলেন, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। শুক্রবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে জবাব দিতে গিয়েই এমন মন্তব্য করেছেন ফিরহাদ হাকিম।
সুকান্ত মজুমদার বৃহস্পতিবার বহরমপুরের এক জনসভা থেকে বলেছেন, ‘হাকিমকেও ভিতরে ঢোকানোর ব্যবস্থা করা হবে।’ বিজেপি নেতার এই মন্তব্য নিয়ে যখন বিতর্ক তুঙ্গে। তখন ফিরহাদ হাকিম চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেছেন, ‘আমি জেলে যেতে ভয় পাই না।’ তাঁর দাবি, শুধুমাত্র সম্মানহানির ভয় পান তিনি। এ প্রসঙ্গে কলকাতা পুরনিগমের মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী বলেন, ‘আমিও একটা জেলে গিয়েছিলাম। হাসপাতালে থাকিনি। আদালতের নির্দেশ ছিল, জেলেই ছিলাম।’
গ্রেফতার হলেই হাসপাতাল, বিশেষত এসএসকেএমে গিয়ে ভর্তি হওয়ার নজির রয়েছে একাধিক নেতার ক্ষেত্রেই। সেই তালিকায় রয়েছেন মদন মিত্র সহ অনেকের। তৃণমূলের আর এক নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করার পর ভুবনেশ্বরে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেও অনেকটা সময় হাসপাতালেই কাটিয়েছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, নারদ-কাণ্ডে একসঙ্গে চার নেতা যখন গ্রেফতার হয়েছিলেন, তখন ফিরহাদ বাদে বাকি তিনজনও হাসপাতালেই ছিলেন।
এ দিন সেই প্রসঙ্গই টেনে আনেন ববি হাকিম। গত বছর মে মাসে নারদ মামলায় একই দিনে ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র, শোভন চট্টোপাধ্যায় ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। এ দিন ফিরহাদ মনে করিয়ে দেন, জেলেই রাত কাটিয়েছিলেন তিনি। জ্বর ও পেটে ব্যাথা থাকা সত্ত্বেও এসএসকেএমে যেতে চাননি ফিরহাদ। বাকি তিন নেতাই ভর্তি ছিলেন হাসপাতালে।
উল্লেখ্য, অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার আগে এসএসকেএমে গিয়েছিলেন একাধিকবার। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও গ্রেফতার হওয়ার পর অসুস্থতার কারণে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। এরই মধ্যে ফিরহাদের এই মন্তব্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়কে প্রশ্ন করা হলে, তিনি বলেন, ‘এ কথা ফিরহাদ কেন বলেছেন, সেটা তো ফিরহাদই ভাল বলতে পারবেন।’