কলকাতা: কলকাতা পুরনিগমের (Calcutta High Court) নাগরিক পরিষেবায় আরও গতি আনতে তৎপর শহরের মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। শুক্রবার কড়া ভাষায় জানিয়ে দিলেন, কলকাতা পুরনিগমে কোনও ফাইল আটকে রাখলেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবার থেকে কোথাও একমাস ফাইল আটকে রাখা হলে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে শোকজ় করা হবে বলেও জানান তিনি। আর যদি ফাইল তিন মাস আটকে থাকে, তাহলে সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে সাসপেন্ড করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
এদিন টক টু মেয়রে ফোন করেন কলকাতা পুরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শ্যামসুন্দর সাউ। এর আগেও জমির মিউটেশন নিয়ে ফোন করেছিলেন টক টু মেয়রে। মেয়রের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি কলকাতা পুরনিগমের হেডকোয়ার্টারে এসে ফাইল জমা দিয়েছিলেন। তিন মাস আগে সেই ফাইল জমা দিলেও ফাইল একটুও এগোয়নি। তাই বাধ্য হয়ে আজ ফের ফোন করেন টক টু মেয়রে।
শ্যামসুন্দর বাবুর ওই ঠিকানা তাঁর বাবা রাজারাম সাউয়ের নামে। যেহেতু ঠিকানায় এইচ রয়েছে, তাই ঠিকা জমি কি না সেই নিয়ে সমস্যা। এভাবে ফাইল আটকে রাখার কথা শুনে মেয়র স্পেশাল কমিশনার সোমনাথ দে’কে উদ্দেশ্য করে বলেন, এবার একটা সিদ্ধান্ত নিন।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২ নভেম্বর অ্যাসেসমেন্ট বিভাগের তিন আধিকারিককে শোকজ করা হয়েছিল। ২৫ নভেম্বর তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়। দেড় বছর ধরে ফাইল আটকে রাখার অভিযোগ ছিল তাঁদের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার টক টু মেয়র কর্মসূচি শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ফিরহাদ হাকিম বলেন, “অনেক জায়গায় আমাদের যে কর্মচারীরা রয়েছেন, তাঁরা অনেক জায়গায় অনেকগুলি জিনিস বুঝতে পারেন না। অনেকক্ষেত্রে ঠিকার ডিটারমিনেশনের আগে তিনি মিউটেশন দিতে পারবেন কি না, তা বুঝতে পারেন না। সেই কারণে ফাইলটি তিন মাস ধরে পড়ে আছে, যা থাকার কথা নয়। যদি কেউ বুঝতে না পারেন, তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠাতে হবে। কিন্তু তা না করে, বুঝতে না পেরে, ঝামেলার কাজ দেখে ফাইলটি রেখে দেওয়া হচ্ছে। সেই কারণে একমাসের বেশি যদি কোনও ফাইল কারও কাছে জমা থাকে, তাহলে শোকজ় করুন। আর যদি তিন মাসের বেশি পড়ে থাকে, তাহলে তিনি কেন সাসপেন্ড হবেন না? এটা আমি কমিশনারকে বললাম। এটি তাঁদের এক্সিকিউটিভ অর্ডারের ব্যাপার।”
মেয়রের বক্তব্য, “এটি না করলে, কর্মীরা বুঝতে না পারলে ফাইল জমিয়ে রাখছেন। তাঁর কাজ, টেবিলের ফাইল ক্লিয়ার করা।” এর পাশাপাশি কলকাতা শহরের সবুজায়নের জন্য শহরের শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের কাছে বিশেষ অনুরোধ করেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সবাইকে এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করেন তিনি। বললেন, “তাহলে কলকাতাকে আরও সবুজ করা যাবে। কারণ, কলকাতার দূষণ ক্রমশ বাড়ছে, বাড়ি হচ্ছে, গাড়ি বাড়ছে। এর সঙ্গে পরিবেশ রক্ষা করতে গেলে শুধু কলকাতা পুরনিগম নয়… শহরের অন্যান্যদেরও এগিয়ে আসতে হবে। সিএসআরের মাধ্যমে এগিয়ে আসতে পারেন।”