Jyotipriya Mallick: আইনের ছাত্র থেকে মমতার একনিষ্ঠ সৈনিক, কীভাবে উত্থান বালুর?

Jyotipriya Mallick: ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর খাদ্যমন্ত্রীর পদ পান মমতার এই দীর্ঘদিনের সহযোগী। জঙ্গলমহলের মানুষের কাছে রেশন পৌঁছে দেওয়া বা করোনাকালে খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য বারবার জ্যোতিপ্রিয়র ভূমিকার প্রশংসা করতে শোনা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে।

Jyotipriya Mallick: আইনের ছাত্র থেকে মমতার একনিষ্ঠ সৈনিক, কীভাবে উত্থান বালুর?
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকImage Credit source: Facebook
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 27, 2023 | 1:14 PM

কলকাতা: ‘বালু দা’ বললেই এক ডাকে তাঁকে চেনে গোটা উত্তর ২৪ পরগনা। খাদ্যমন্ত্রী বা বনমন্ত্রীর তকমা তো যোগ হয়েছে পরে, তারও অনেক আগে থেকে একজন দক্ষ রাজনীতিক হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন দীর্ঘদিন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাঁদের চোখ বন্ধ করে ভরসা করতে পারতেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম নাম বালু। বালুও ছিলেন দিদি-র অন্ধ অনুগামী। আইনের ছাত্র জ্যোতিপ্রিয় তৃণমূলের একেবারে প্রথম দিনের সৈনিক। দল প্রতিষ্ঠার সময় রেজিস্ট্রেশনেও স্বাক্ষর ছিল এই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। এক সময় কলেজ স্ট্রিট দাপিয়ে বেড়ানো, কংগ্রেস করা সেই ছেলেটার উত্থানের সাক্ষী বহু রাজনীতিক। কখনও ধাক্কা খেয়েছেন, কখনও কোণঠাসা হয়েছেন। তবু জমি ছাড়েননি।

যাঁর কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি, ব্যাঙ্ক ব্যালান্স আজ আলোচনার শীর্ষে, দুর্নীতির অভিযোগে যাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের উত্থান কীভাবে?

একসময়ের ছাত্র পরিষদ নেতা

বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র পরিষদের নেতা ছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। মধ্য কলকাতায় কংগ্রেস রাজনীতি করলেও সোমেন মিত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁর সংযোগ ছিল না খুব একটা। পরবর্তী সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যুব কংগ্রেসের সভানেত্রী হওয়ার পর তাঁর ঘনিষ্ঠ বলয়ে চলে আসেন বালু। সেই সময় তিনি অলোক দাসের সঙ্গে জুটি বেঁধে উত্তর ২৪ পরগনা জুড়ে সংগঠন করতেন। পরবর্তীতে ২০০১ সালে বিধায়ক হন তিনি।

মমতার ভরসার পাত্র বালু

সেই ছাত্র পরিষদের সময় থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পরিচয় জ্যোতিপ্রিয়র। পরে তৃণমূল দল প্রতিষ্ঠা হওয়ার সময় রেজিস্ট্রেশনেও স্বাক্ষর ছিল তাঁর। রাজনৈতিক মহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্ধ অনুগামী বলে বরাবরই পরিচিত জ্যোতিপ্রিয়। মমতার ঘনিষ্ঠ বৃত্ত থেকে কখনই তাঁর নাম বাদ পড়েনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে কোনওদিন কোনও বাঁকা মন্তব্য করেননি জ্যোতিপ্রিয়। কংগ্রেসের একসময়ের যে তরুণ তুর্কী নেতারা আজও মমতার সঙ্গে আছেন, তাঁদের মধ্যে প্রথম সারিতেই বালু। ২০০৬ সালের মাঝামাঝি থেকে উত্তর ২৪ পরগনার রাজনীতিতে তিনি হয়ে ওঠেন শেষ কথা।

মতুয়া ভোটব্যাঙ্কে ভরসা ছিলেন বালুই

একটা সময় যে গোটা মতুয়া সম্প্রদায় ছিল তৃণমূলের পক্ষে, তার কৃতিত্ব জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ছিল বলেই মনে করে রাজনৈতিক মহল। বড়মা বীণাপাণি দেবীর আশীর্বাদ ধন্য ছিলেন তিনি। তৃণমূলের আগে কোনও দল সেভাবে মতুয়াদের ভোট ব্যাঙ্ক হিসেবে এতটা গুরুত্ব দেয়নি। মতুয়া সমর্থন আদায়ে সফল হওয়ার পরই দলে বিশেষ গুরুত্ব বেড়েছিল জ্যোতিপ্রিয়র। মুকুল রায়ের মতো নেতা থাকা সত্ত্বেও উত্তর ২৪ পরগনায় কখনও দাপট কমেনি বালুর।

তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরই মন্ত্রিত্ব

২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর খাদ্যমন্ত্রীর পদ পান মমতার এই দীর্ঘদিনের সহযোগী। জঙ্গলমহলের মানুষের কাছে রেশন পৌঁছে দেওয়া বা করোনাকালে খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য বারবার জ্যোতিপ্রিয়র ভূমিকার প্রশংসা করতে শোনা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে।

ধাপে ধাপে যাঁর উত্থান হয়েছিল, তাঁকে পরের দিকে ধাক্কাও খেতে হয়েছিল। দোর্দণ্ড প্রতাপ হয়ে ওঠা বালুকে ঘিরে ক্ষোভ বাড়ছিল তৃণমূলের অন্দরেই। সামনে আসছিল গোষ্ঠীবাজির অভিযোগ। শুধু তাই নয় যে মতুয়া ভোট ব্যাঙ্ক ঘিরে বালুর রমরমা, সেই মতুয়ারাও মুখ ফেরাচ্ছিলেন তাঁর দিক থেকে। আর পরে একেবারে কেন্দ্রীয় সংস্থার নজরে চলে এলেন সেই বালু। কোটি কোটি টাকার রেশন দুর্নীতিতে নাম জড়ানোর পরই গভীর রাতে গ্রেফতার হয়েছেন তিনি।