কলকাতা: সরু গলি দিয়ে ঢুকে ঘিঞ্জি এলাকা। চারিদিকে ঝুপড়ি। সেখানে থাকেন প্রচুর মানুষ। কিন্তু তারই আশপাশে ব্যাঙের ছাতার মতো মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে একাধিক বহুতল। এমনই চিত্র গার্ডেনরিচের ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে। রবিবার মধ্যরাতে সেখানেই ভেঙে পড়েছে নির্মীয়মাণ একটি বহুতল। সেই বহুতলের আশপাশে ছিল প্রচুর ঝুপড়ি। নির্মীয়মাণ বহুতলটি ভেঙে পড়েছে সেই ঝুপড়িগুলির উপরেই। এর জেরে এখনও পর্যন্ত ২ জন মহিলার মৃত্যুর খবর মিলেছে। আহত অনেক। এই ঘটনা ঘিরেই গার্ডেনরিচে অবৈধ বহুতল নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। বিপর্যয়ের পর স্থানীয়রাই প্রশ্ন তুলেছেন, নির্মাণের বৈধতা নিয়ে। বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তাঁরা।
মধ্য রাতে ঝুপড়ির বাসিন্দাদের অনেকেই পড়েছিলেন ঘুমিয়ে। তখনই বিকট শব্দে ভেঙে পড়ে বহুতল। যাঁরা তাতে চাপা পড়েছেন, তাঁদের তো ক্ষতি হয়েইছে। আর চাপা না পড়ে কোনও মতে বেঁচেছেন তাঁদেরকে গ্রাস করেছে আতঙ্ক। প্রতিবেশী বা প্রিয়জনের ক্ষতিতে এক দিকে যেমন মর্মাহত, তেমনই প্রশাসনিক উদাসীনতার অভিযোগে সরব। তা নিয়েই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তাঁরা।
এ নিয়ে সেখানকার এক স্থানীয় মহিলা বলেছেন, “আমরা তো গরিব। আমাদের ঘরটা কী করে হবে। বিল্ডিং তোলার সময় আমার মামা অবজেকশন করেছিল। তখন বলেছিল, ঠিক করে দেব। এখন ভেঙে গিয়েছে। কে দেবে গুনগার? আমার মামীর অত বড় ক্ষতি হল। কে দেখবে? ওরা তো পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তখন বলা হয়েছিল অতদূর তুলো না। কিন্তু শোনে নিই। আজ এই ক্ষতি কে পূরণ করবে? প্রাণটাই তো চলে যেত। কে দেখত তখন?”
ওই এলাকার অপর এক বাসিন্দা বলেছেন, “এখানে না সয়েল টেস্ট হয়েছে, না কিছু হয়েছে। এ রকম বহু বিল্ডিং এখানে হয়ে রয়েছে। সবই সম্ভব এখানে। আশপাশে ২-৩টে বাড়ি পুরো চাপা পড়ে গিয়েছে। বাকি বাড়িরও ক্ষতি হয়েছে। আমরা কিছু উদ্ধার করেছি। এখন তো উদ্ধার দল কাজ করছে। আমি নিজে তিন জনকে বের করেছি। সয়েল টেস্ট ছাড়া একটা বিল্ডিং কীভাবে তৈরি হয়?”