কলকাতা : প্রায় ২ বছর পর স্কুল খুলেছে রাজ্যে। মাঝে পরীক্ষা থাকায়, সরকারি নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও অনেক স্কুলে পঠন-পাঠন বন্ধ ছিল। এপ্রিলের শুরুতেই স্বাভাবিক নিয়মে স্কুলে যেতে শুরু করেছে। অনেক দিন পর স্বস্তি ফিরেছে পড়ুয়াদের। কিন্তু স্কুলে যেতেই নতুন বিপত্তি। শুরু হয়েছে বেতন বিতর্ক। অনেককেই প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না, মনই অভিযোগ ওঠে কলকাতার জিডি বিড়লা স্কুলে। গত কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন অভিভাবকরা। বুধবার আদালতে এই সংক্রান্ত মামলা হওয়ার পর বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ করে দেওয়া হল শহরের সেই স্কুল।
বৃহস্পতিবার সকালে একটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে স্কুলের তরফ থেকে। স্কুলের দরজায় সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে সেই বিজ্ঞপ্তি। জানানো হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ও পড়ুয়াদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের বাইরে যে বিক্ষোভ দেখান হচ্ছে, সেই প্রসঙ্গই উল্লেখ করা হয়েছে।
গত সোমবার জিডি বিড়লা স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হয়নি একাধিক ছাত্রীকে। অন্তত ১০০ জন পড়ুয়াকে স্কুলে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। অভিভাবকদের দাবি, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুসারে স্কুলের বকেয়া বেতন মেটানোর পরও প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি ছাত্রীদের। স্কুলের ধার্য করা বেতনই দিতে হবে বলে জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলে প্রবেশ করতে গেলে কার্যত মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ জানান পড়ুয়ারা। যে সব অভিভাবকেরা স্কুলের ফি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এবং হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী ৫০ শতাংশ ফি জমা দিয়েছিলেন, সেই সব ছাত্রীদের স্কুলে ঢুকে দেওয়া হয়নি। এই ইস্যুতেই গত কয়েকদিন ধরে চলে বিক্ষোভ।
স্কুলের ফি বিতর্ক নিয়ে মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। ৮০ শতাংশের বেশি ফি দেওয়া সত্ত্বেও কেন নতুন ক্লাসে তোলা হয়নি, তা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। জিডি বিড়লা, মহাদেবী বিড়লা, অ্যাডামাস সহ বেশ কিছু স্কুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে।
স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, এই ৮০ শতাংশ নিয়ে সমস্যা। অভিভাবকদের হিসেবে ৮০ শতাংশ, স্কুলের ধার্য করা অঙ্কের থেকে অনেক কম। তবে কাউকে বের করে দেওয়া হচ্ছে না বলে দাবি করে স্কুল।
বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য প্রশ্ন তোলেন যদি কাউকে বের করে দেওয়া হয়নি তাহলে সমস্যা কোথায়? আদালত জানায়, সবাইকে নতুন ক্লাসে নিতেই হবে। বৃহস্পতিবার থেকে যাতে স্কুলে যেতে পারে পড়ুয়ারা, সেই নির্দেশ দেন বিচারপতি। বিচারপতি আই পি মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের তরফে এই নির্দেশ দেওয়া হয়। আগামী দু সপ্তাহের মধ্যে বাকি ২০ শতাংশ দিতে হবে বলেও নির্দেশ দেয় আদালত।
আর এই নির্দেশের পরই জিডি বিড়লা স্কুলের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হল যে স্কুল আপাতত বন্ধই থাকছে।