কলকাতা : স্কুলে যাওয়া। বাড়িতে ফিরে দু’দণ্ড বিশ্রাম নেওয়ার সময় নেই। একটার পর একটা টিউশন। পড়ুয়াদের এখন দৈনন্দিন রুটিন এটাই। টিউশন ছাড়া সন্তান পরীক্ষায় ভাল করবে, এটা এখন বেশিরভাগ অভিভাবক ভাবতে পারেন না। সেখানে কোনও গৃহশিক্ষক ছাড়াই সিবিএসই-র (CBSE) দশম শ্রেণির পরীক্ষায় তাক লাগাল তানভি আগরওয়াল। লক্ষ্মীপথ সিংঘানিয়া অ্যাকাডেমির ছাত্রী। সিবিএসই দশম শ্রেণির পরীক্ষায় ৫০০-র মধ্যে পেল ৪৯৯। আর পরীক্ষায় এত ভাল ফল করার জন্য স্কুলের শিক্ষক এবং বাড়ির লোকদের কৃতিত্ব দিল সে। একইসঙ্গে তার পরামর্শ, ভাল ফল করার জন্য স্কুল এবং বাড়িতে পড়লেই হবে।
বাবা বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। মা ব্যাঙ্কের কর্মচারী। তানভির এক ছোট বোন রয়েছে। রয়েছেন দাদু-ঠাকুমা। ছোট থেকেই মেধাবী তানভি। স্কুলের পরীক্ষায় বরাবর ভাল ফল করে এসেছে। ছোটবেলা থেকেই বাবা-মা তাকে বাড়িতে পড়ায়। কোনও গৃহশিক্ষক নেই।
নিজের ভাল ফলের জন্য স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কৃতিত্ব দিয়ে তানভি বলে, “স্কুলের শিক্ষকরা যখন পড়ান, তখনই সেটা বোঝার চেষ্টা করি। কোনও অসুবিধা হলে শিক্ষকদের জিজ্ঞাসা করেছি। প্রয়োজনে শিক্ষকরা স্কুল শেষে অতিরিক্ত ক্লাস নিয়েছেন। এমনকী, অনলাইনে ক্লাস যখন হচ্ছিল, তখন প্রয়োজন হলেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে কথা বলেছি। কোনও কোনও ক্ষেত্রে সমস্যা হলে মেসেজ পাঠিয়ে রাখতাম, শিক্ষক-শিক্ষিকারা সময় মতো উত্তর দিতেন।”
বাড়িতে তার বাবা-মা পড়াশোনায় সাহায্য করেছেন। এমনকী, দাদুর কাছেও পড়াশোনায় সাহায্য পেয়েছে সে। তানভি বলে, “বাড়িতে পড়াশোনায় কোনও অসুবিধা হলে বাবা-মাকে জিজ্ঞাসা করেছি। প্রয়োজনে দাদু সাহায্য করেছে।”
এখন বেশিরভাগ পড়ুয়াই পড়াশোনার জন্য গৃহশিক্ষকের উপর নির্ভর করে। তাদের কী বার্তা দেবে? তানভির পরামর্শ, “গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ার দরকার নেই। স্কুলে পড়ার পর টিউশন পড়লে আরও সময় লাগে। তার চেয়ে সেই সময় নিজে পড়লে ভাল হয়। স্কুলের শিক্ষকদের কাছ থেকে পড়াশোনা ভাল করে শুধু বুঝে নিতে হবে।”
এ বছর মোট ২১ লক্ষ ৯ হাজার ২০৮ জন পরীক্ষার্থী সিবিএসই-র দশম শ্রেণির পরীক্ষায় বসেছিল। আজ ফল ঘোষণার পর দেখা যায়, ১৯ লক্ষ ৭৬ হাজার ৬৬৮ জন পরীক্ষার্থী পাশ করেছে। পাশের হার ৯৪.৪০ শতাংশ। ৯৫ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে পাশ করেছে ৬৪ হাজার ৯০৮ জন পরীক্ষার্থী। ২ লক্ষ ৩৬ হাজারের বেশি পরীক্ষার্থী ৯০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছে।