কলকাতা: করোনা পরিস্থিতিতে স্কুলে যাওয়া বাধ্যতামূলক নয়। এতে পড়ুয়াদের উপস্থিতিতে কোনও প্রভাব পড়ছে না। এ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)-ও জানালেন, তিনি আদালতের এই নির্দেশকে স্বাগত জানাচ্ছেন। বলেন, “আমি আদালতকে ধন্যবাদ জানাব যে তাঁরা আমাদের এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সদিচ্ছার কথা বুঝতে পেরেছেন। মুখ্য়মন্ত্রী বারবার চেয়েছিলেন যে বাচ্চারা জনজীবনের মূলস্রোতে ফিরে আসুক…”
ব্রাত্য বাবু যোগ করেন, “তবে আমাদের দিক থেকে আসতেই হবে (স্কুলে) এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। যার ইচ্ছে হ বে আসবে। যাঁদের মনে হবে, তাঁরা বাচ্চাকে পাঠাবেন না (স্কুলে)। কিছ ভীতি কাজ করে। তবে আমরা আমাদের দিক থেকে নিশ্চিত করতে পারি কোভিড পরিস্থিতিতে পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে আমরা যাবতীয় প্রতিষেধক নিয়েছি।”
প্রসঙ্গত, এদিন স্কুল খোলা নিয়ে জনস্বার্থ মামলায় হাইকোর্ট জানিয়েছে এই বিষয়ে আপাতত হস্তক্ষেপ করতে নারাজ তারা। এমনকি জনস্বার্থ মামলার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব। অভিযোগ থাকলে অভিভাবকরাই আদালতে আসবেন বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি।
এদিকে প্রশ্ন উঠেছে, একই ক্লাসে কোনও পড়ুয়া স্কুলে গেল, কেউ কেউ গেল না। সেক্ষেত্রে তো ক্লাসে অনুপস্থিত পড়ুয়াদের অনলাইনে ক্লাস করাতে হবে। হাইব্রিড মোডে পড়াশোনা করাতে হবে। এদিকে অনলাইন ও ক্লাসে গিয়ে পড়ুয়াদের মূল্যায়ন হবে একই পদ্ধতিতে। তাই এ নিয়ে শিক্ষামহলে সংশয় দেখা দিচ্ছে। তবে আগামী ১৬ তারিখ স্কুল খোলার সিদ্ধান্তে শিক্ষক মহল থেকে অভিভাবকদের সিংহভাগই স্বাগত জানিয়েছেন।
ইউনাইটেড গার্ডিয়ান ফোরামের রাজ্য সম্পাদক সুপ্রিয় ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়া, ইচ্ছুক অভিভাবকরা যাতে পড়ুয়াদের স্কুলে পাঠান এ নিয়ে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে স্কুল খোলা দরকার ছিল। দীর্ঘ ২০ মাস বন্ধ স্কুল। শিক্ষার ক্ষতি হচ্ছিল। তাই সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি।
রাজ্যের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, সকাল সাড়ে ন’টা থেকে বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত নবম ও একাদশ শ্রেণি, দশম ও দ্বাদশ শ্রেণিকে ১০.৩০ থেকে বিকেল ৪ টে পর্যন্ত করোনা বিধি মেনে প্রতিদিন স্কুল করতে হবে। তবে মামলাকারীর বক্তব্য ছিল, এমন অনেক পড়ুয়াই আছে, যাদের ভ্যাকসিন ডোজ় সম্পূর্ণ হয়নি। এতে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা বাড়বে। অতিরিক্ত সময় স্কুল থাকার ক্ষেত্রেও একই সমস্যা দেখা দেবে। মামলাকারী সুদীপ ঘোষ চৌধুরীর আদালতে সওয়াল করেন, বিশেষজ্ঞদের দিয়ে একটি কমিটি করা হোক। সেই কমিটি সময় কমিয়ে কীভাবে স্কুল চালু রাখা যায়, তার সুপারিশ করা প্রয়োজন। তাঁর বক্তব্য ছিল, রাজ্যের বিজ্ঞপ্তিতে একাধিক জায়গায় বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। পাল্টা এজি আদালতে জানান, অতিরিক্ত সময় নেওয়া হয়েছে কারণ ১০ মিনিট প্রতিদিন করোনা সচেতনতার ক্লাস করানো হবে। সব কোভিড গাইডলাইন মানা হচ্ছে। ছাত্ররা স্কুলে যেতে চাইছে।
আরও পড়ুন: School Reopening: ১৬ নভেম্বর থেকে কি আদৌ খুলছে বাংলার স্কুল? মামলার প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের বড় ঘোষণা