Diamond: বাড়ির স্যুইচবোর্ডের ভিতর থেকে উদ্ধার ২১ বছর আগে খোয়া যাওয়া হীরে, বিচারকের মুখে ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’

TV9 Bangla Digital | Edited By: Sukla Bhattacharjee

Aug 14, 2023 | 5:50 PM

Diamond: কলকাতা থেকে চুরি যাওয়া গোলকুন্ডা হীরের হদিশ মিলল অবশেষে। দীর্ঘ ২১ বছর ধরে তল্লাশি অভিযান চালানোর পর সেই হীরের হদিশ পাওয়ার রোমাঞ্চকর ঘটনা 'জয় বাবা ফেলুনাথ' সিনেমার কথাই মনে করিয়ে দিল।

Diamond: বাড়ির স্যুইচবোর্ডের ভিতর থেকে উদ্ধার ২১ বছর আগে খোয়া যাওয়া হীরে, বিচারকের মুখে জয় বাবা ফেলুনাথ
প্রতীকী ছবি।
Image Credit source: TV9 Bharatvarsh

Follow Us

কলকাতা: ভারত থেকে কোহিনুর হীরে (Kohinoor Diamond) চুরির কথা সকলেরই জানা। আজও সেই কোহিনুর দেশে ফেরেনি। তবে কলকাতা (Kolkata) থেকে চুরি যাওয়া গোলকুন্ডা হীরের হদিশ মিলল অবশেষে। দীর্ঘ ২১ বছর ধরে তল্লাশি অভিযান চালানোর পর সেই হীরের হদিশ পাওয়ার রোমাঞ্চকর ঘটনা ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’ সিনেমার কথাই মনে করিয়ে দিল। তাই হীরেটি প্রকৃত মালিকের হাতে তুলে দেওয়ার সময় বিচারকের মুখেও উঠে এল এই কালজয়ী সিনেমার নাম।

অস্কারজয়ী সত্যজিৎ রায়ের কালজয়ী সিনেমাগুলির মধ্যে একটি ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’। সেই সিনেমায় যেমন এক মূল্যবাণ বস্তুকে দুর্গা মূর্তির সঙ্গে থাকা সিংহের মুখে রাখা হয়েছিল, বহু তল্লাশি অভিযানের পর নিজের বুদ্ধি প্রয়োগ করে সিংহের মুখের ভিতর থেকে সেই বস্তুটির হদিশ পেতে সমর্থ হন ফেলুদা। ঠিক তেমনই কলকাতা থেকে চুরি যাওয়া গোলকুণ্ডা হীরেটি যেখান থেকে পাওয়া গিয়েছে, সেটা শুনলে সকলেরই চোখ কপালে উঠবে। বাড়ির মিটারবক্সের পিছনে স্যুইচবোর্ডের একটি স্যুইচের পিছনে লুকিয়ে রাখা ছিল চুরি যাওয়া মহামূল্যবান সেই হীরে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতার বাসিন্দা প্রণব কুমার রায়ের থেকে চুরি গিয়েছিল ৩২ ক্যারেটের গোলকুণ্ডার হীরে। বর্তমানে সেই হীরের বাজারমূল্য প্রায় ১৫ কোটি টাকা। ২০০২ সালে এই হীরে চুরি যায়। ২১ বছর ধরে মামলা চলছিল। বহুবার তল্লাশি অভিযানের পর অবশেষে সেই হীরের হদিশ মিলেছে।

ঘটনাটি ঠিক কী ঘটেছিল?

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা প্রণব কুমার রায় দীর্ঘদিন ধরে মূল্যবান হীরের খোঁজ করছিলেন। সেই সূত্রে ২০০২ সালের জুন মাসে হীরের দালাল ইন্দ্রজিৎ তপদারের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। তারপর ইন্দ্রজিৎ তপদার ভ্যালুয়ার হিসাবে আসা এক ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে প্রণববাবুর বাড়িতে যান। আংটিতে যেরকম হীরে পড়ে, সেরকম হীরের কথা বলেছিলেন প্রণববাবু। সেই হীরের কথা উঠতেই ইন্দ্রজিৎ তপদারের সঙ্গে আসা ওই ব্যক্তি পিস্তল বের করেন এবং হীরেগুলি তাঁর সঙ্গীর হাতে দেন। হীরে নিয়ে ইন্দ্রজিৎ তপদারের সঙ্গে যখন প্রণব রায়ের তর্কাতর্কি-হাতাহাতি চলছিল, সেই সুযোগে সেখানে উপস্থিত এক ব্যক্তি হীরেগুলি ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। তারপর আর সেই হীরের হদিশ মেলেনি।

এই ঘটনার পরই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন প্রণব রায়। তদন্তে নেমে পুলিশ ইন্দ্রজিৎ তপদারকে গ্রেফতার করে। ওই ব্যক্তিকেও পাকড়াও করে। কিন্তু, বহু তল্লাশি অভিযানের পরেও সেই হীরের হদিশ মেলেনি।

তবে পুলিশও হার মানতে নারাজ ছিল। তাই বারবার ব্যর্থ হলেও হারিয়ে যাওয়া সেই হীরের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে গিয়েছে। ইন্দ্রজিৎ তপদারের বাড়িতে যেখান দিয়ে পুলিশ ঢুকত, সেই গেটের পাশে সিঁড়ির নীচে একটি মিটারবক্স ছিল। সেই মিটারবক্সের পিছনে স্যুইচবোর্ড ছিল। সেগুলি বারবার পুলিশের নজরে পড়লেও সেদিকে গুরুত্ব দেননি পুলিশকর্মীরা। সম্প্রতি হঠাৎ করেই সেই মিটারবক্স এবং স্যুইচবোর্ড খতিয়ে দেখে পুলিশ। তারপর সেই স্যুইচবোর্ডের ভিতর থেকেই উদ্ধার হয় মহামূল্যবান হীরে।

বলা যায়, শেষ পর্যন্ত পুলিশের বুদ্ধির কাছে হার মানল চোরের বুদ্ধি। ২১ বছর পর অবশেষে আদালতের নির্দেশে মালিকের কাছে ফিরে এল মহামূল্যবান সেই হীরে। অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। এই ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই কালজয়ী সিনেমা জয় বাবা ফেলুনাথ-এর কথা মনে করিয়ে দেয়।

Next Article