কলকাতা: পুরুষতান্ত্রিক ভাবাবেগ, স্ত্রীকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতার জেরে প্রায়শই নানা নারকীয় ঘটনার কথা শোনা যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই। এবার গত সপ্তাহের শেষে সেরকমই একটি ঘটনা ঘটে যায় বাংলার বুকে। ঘুমন্ত অবস্থায় কাটোয়ার কেতুগ্রামের(ketugram) স্ত্রীর কেটে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে স্বামীর বিরুদ্ধে। স্ত্রী রেণু খাতুন(Renu Khatun) চাকরি পাওয়ার পর তাঁকে ছেড়ে চলে যেতে পারে, এই আশঙ্কাতেই হাত কেটে রেণুকে চরম শাস্তি দিতে চেয়েছিল স্বামী শের মহম্মদ। যে ঘটনা শুনে শিউরে ওঠে গোটা বাংলা। এবার সেই রেণুকে চাকরি দিতেই বড় বার্তা দিতে দেখা গেল মমতাকে।
প্রসঙ্গত, বুধবার ভবানীপুরে যান মমতা (CM Mamata Banerjee)। পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে পাশে নিয়ে জোড়া খুনের তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনই কেতুগ্রামের ঘটনা নিয়েও কথা বলেন তিনি। দেন চাকরির প্রতিশ্রুতিও। একইসঙ্গে তাঁর যে হাত কাটা গিয়েছে তার জায়গায় সরকারের তরফে আর্টিফিসিয়াল হাত লাগিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানান মমতা। এদিন ভাবনীপুর থেকেই মমতা বলেন, “জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান লীনা গাঙ্গুলী ইতিমধ্যেই কেতুগ্রামে গিয়েছিলেন। সরকার নির্যাতিতার পাশে দাঁড়ানোর জন্য সর্বোতভাবে চেষ্টা করছে। মেয়েটি যেহেতু নার্সিং পরীক্ষার প্যানেলে ২২ নম্বরে ছিল সে কথা মাথায় রেখে তাঁকে চাকরির দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। এখন তো ওর ডান হাত নেই। তাই যে কাজটা করতে পারে বসে বসে, কথা বলে যে কাজ করা যায় সেই কাজই তাঁকে দেওয়া হবে। একইসঙ্গে আমরা ওর জন্য আর্টিফিসিয়াল হাতেরও ব্যবস্থা করে দেব। পাশাপাশি স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে কেন তাঁর চিকিৎসা হল না, কেন চিকিৎসার জন্য ৫৭ হাজার টাকা খরচ হল তা সরকার দেখে নেবে”।
প্রসঙ্গত, শনিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ঘুমের মধ্যেই স্ত্রী রেণু খাতুনের ডান হাত কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল কেতুগ্রামের বাসিন্দা স্বামী শের মহম্মদের বিরুদ্ধে। যা দেখে শিউরে ওঠে গোটা বাংলা। একইসঙ্গে এই কাণ্ডের পিছনে স্বামীর ‘উদ্দেশ্য’ জেনে অবাক হয় সকলে। স্ত্রীর কাজ নিয়ে কোনও ব্যক্তি কীকরে এতটা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে পারেন সে প্রশ্নও উঠতে পারে নাগরিক মহলে। যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসে আছেন একজন মহিলা সেখানে মেয়েদের উপর এই ধরনের পাশবিক অত্যাচার কী করে হচ্ছে সে প্রশ্নও উঠতে শুরু করে।