কলকাতা: সি.ভি আনন্দ বোস বাংলার রাজ্যপালের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তাঁর মুখে রাজ্য সরকার সহ মুখ্যমন্ত্রীর কাজের একাধিক প্রশংসা শোনা গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির অনুষ্ঠানে যেমন রাজ্যপাল সস্ত্রীক গিয়েছিলেন, তেমনই রাজ্যপালের পারিবারিক অনুষ্ঠানে তাঁর বাড়িতে গিয়েও নিমন্ত্রণ রক্ষা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে এলেন রাজ্যপাল সি.ভি আনন্দ বোসের পরিবার। শনিবার সন্ধ্যায় রাজভবন থেকে সরাসরি কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে যান রাজ্যপালের স্ত্রী, ছেলে, এবং নাতি। যদিও তাঁদের এই হঠাৎ আগমনের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়।
জানা গিয়েছে, এদিন রাতে রাজ্যপাল সি.ভি আনন্দ বোসের স্ত্রী এল.এস লক্ষ্মী, ছেলে বাসুদেব আনন্দ বোস এবং নাতি আদ্ভেত নায়ার কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে যান। রাজ্যপালের পরিবারের হঠাৎ করে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে আগমন নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। যদিও এটা নিছক সৌজন্য সাক্ষাৎকার বলে রাজভবনের তরফে জানানো হয়। মুখ্যমন্ত্রীর তরফে অবশ্য এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
অন্যদিকে, রাজ্যপালের স্ত্রী, পুত্র, নাতির মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে আগমন নিয়ে রাজনৈতিক জল্পনায় কার্যত জল ঢেলে দিয়েছেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। রাজভবনের বিবৃতি অনুযায়ী রাজ্যপালের পরিবারের মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে আগমনের ঘটনাকে সৌজন্য সাক্ষাৎকার তরমা দিয়ে লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাজনীতিতে সৌজন্য দেশ ও রাজ্যের পক্ষে মঙ্গলদায়ক।”
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিককালে রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাতের সাক্ষী হয়েছে বাংলা। বিভিন্ন ইস্যুতে পূর্বতন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে রাজ্য সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংঘাত বারবার প্রকাশ্যে এসেছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, দিল্লি গিয়ে রাজ্যপাল বদলেরও দাবি জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর উপ-রাষ্ট্রপতি হিসাবে জগদীপ ধনখড় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে এবং নির্বাচনে জয়ী হলে বাংলায় নতুন রাজ্যপাল আসে। বাংলার রাজ্যপালের দায়িত্ব নেন সি.ভি আনন্দ বোস। তিনি অবশ্য আগে বাংলায় আমলা হিসাবে কাজ করেছেন। বাংলার রাজ্যপালের দায়িত্ব গ্রহণের আগে থেকেই তাঁর মুখে বাংলার এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসা শোনা যায়। রাজ্যপাল পদে বসার পরেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও রাজ্যপাল সি.ভি আনন্দ বোসকে জেন্টলম্যান তকমা দিয়েছেন। এর আগে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে সস্ত্রীক রাজ্যপালকে দেখা গিয়েছিল। তবে এবার বিশেষ কোনও অনুষ্ঠান ছাড়াই রাজ্যপালের পরিবারের মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে আগমন বাংলার রাজনৈতিক সৌজন্যে এক অন্য মাত্রা নিল।