কলকাতা: আচার্যের পর এবার ভিজিটর পদেও বদল? সেই সম্ভাবনা জোরাল হচ্ছে। ভিজিটর পদ থেকে সরানো হচ্ছে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটর পদে বর্তমানে রয়েছেন রাজ্যপাল। নবান্ন সূত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটর পদে বসতে পারে শিক্ষামন্ত্রী। আইনি প্রক্রিয়াও ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে বলে খবর। রাজ্য মন্ত্রিসভার ক্যাবিনেট বৈঠকের পর শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, আচার্য পদে আর এখন রাজ্যপাল থাকবেন না। মুখ্যমন্ত্রী আসবেন। সেই মতো করে বিধানসভায় আইন আনতে চলেছে রাজ্য় সরকার। শুধু আচার্য পদে নয়, ভিজিটর পদেও পরিবর্তন হতে পারে। ভিজিটর পদে রাজ্যপালকে সরানোর ভাবনা রয়েছে রাজ্য সরকারের। এই নিয়ে ক্যাবিনেট বৈঠকেও আলোচনা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, বিধানসভায় আইন আসবে, আইন সংশোধন হবে, তারপর বিজ্ঞপ্তি জারি হবে। সেক্ষেত্রে পদাধিকার বলে ভিজিটর পদে আসতে পারবেন উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
রাজ্য সরকারের বক্তব্য, আচার্য ও ভিজিটর পদে রাজ্যপাল থাকায় বিভিন্ন কাজ আটকে থাকে অনেকক্ষেত্রেই। কাজের গতি শ্লথ হয়। কারণ রাজ্যপাল অনেকক্ষেত্রেই বিভিন্ন ফাইলে সই করেননি।
এই নিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “অনেকেই ভাবতে পারেন রাজ্যপালের ক্ষমতাকে কম করা হচ্ছে। কিংবা তাঁকে আটকানোর চেষ্টা হচ্ছে। তবে আমি বলব এটা সেকেন্ডারি বিষয়। প্রাথমিকভাবে যেটা আমার মনে হয়, সরকার চাইছে শিক্ষাব্যবস্থাকে কুক্ষিগত করতে। তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিচ্ছু হবে না। সব জায়গায় নিজেদের লোক বসিয়েছে। বাংলায় তো চাকরি নেই, তবে এখনকার ছেলেমেয়ে আর ভবিষ্যতে বাইরে গেলেও চাকরি পাবে না।”
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “এই বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। যিনি পিএইচডি প্রাপকদের শংসাপত্র দেন, তিনিই জাল ডক্টরেট। মুখ্যমন্ত্রীর নিজস্ব তো একটা বোধ থাকতে হত যে আমি কী করে ওঁদের দেব? মুখ্যমন্ত্রীর তো ভাবা উচিত, আমি ডক্টরেট লিখে পার্লামেন্টে পাঠিয়েছিলাম, তারপর সেটা লেখাও বন্ধ করে দিয়েছি। এক জন শিক্ষামন্ত্রী যিনি হেফাজতে যাচ্ছেন, আরেকজন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মেয়ের চাকরির দুর্নীতিতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। আরেক জন শিক্ষামন্ত্রী ভিজিটর হচ্ছেন। তোলাবাজরা ভিজিটর হবেন? বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে কি তোলাবাজের ক্ষেত্র হিসাবে ধরছেন?”
কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, “বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি বিনিয়োগ থেকে পালাবে। সব কিছুই তাঁর নিজের কবজায় রাখতে হবে! ” রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত এর আগেও ঘটেছে একাধিকবার। উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রেও রাজ্যপাল একজন ভিন্ন প্রার্থীকে নিয়োগ করেছিলেন। রাজ্য সরকার মানেনি। শিক্ষা নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে বিকাশভবনের একটা সংঘাত ছিলই।