কলকাতার রাস্তায় ৯টি সংগঠন
(নিজস্ব চিত্র)
আজ ফের চাকরির দাবিতে সংঘবদ্ধ হয়ে পথে নেমেছেন চাকরি প্রার্থীদের ৯টি সংগঠন। তাদের মধ্যে রয়েছে নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ, নার্সদের সংগঠন সহ অন্যান্যরা। এদিন শিয়ালদহ স্টেশনের কাছ থেকে জমায়েত শুরু হয়। সেখান থেকে স্লোগান দিতে-দিতে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। আন্দোলনকারীদের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সমাজকর্মী মীরাতুন নাহারও।
- তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ চাকরিপ্রার্থীদের মিছিল প্রসঙ্গে বললেন, “কেউ কেউ মিছিলে যাননি। যোগ্য প্রার্থীদের চাকরি দিতে সরকার চায়। আবার কেউ কেউ ভাইফোঁটা নিতে যান। যোগ্য প্রার্থীদের আবেগকে কাজে লাগিয়ে কোনও কোনও দল সুপরিকল্পিত মিছিল করেছেন। কেউ কেউ যোগ্য আছেন। কিন্তু ওই মিছিলে বাকিরা এর ফায়দা লুটছে। নিয়োগের দরজা খুলছে। তবে কেউ কেউ চাইছে নিয়োগ যেন না হয় । মঞ্চগুলি যেন টেকে। তাই অরাজনৈতিক আদলে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করতে চাইছে রাজ্যের প্রত্যাখ্যাত শক্তিগুলি।”
- চাকরিপ্রার্থীদের বিশাল জমায়েতের জেরে শহরের প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলা চত্বর কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। রাস্তায় শুয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের একাংশ।
- কেন আন্দোলনকারীরা জোট বেঁধে রাস্তায় নামলেন? মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা বলছেন, যদি তাঁরা একতার মধ্যে থাকেন, তাহলে ‘অশুভ শক্তির কারণগুলিকে’ তাঁরা দূর করতে পারবেন। সরকার থেকে বার বার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা পূরণ হয়নি। সেই কারণেই তাঁরা একজোট হয়ে রাস্তায় নেমেছেন বলে জানাচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা। উল্লেখ্য, এদিন চাকরিপ্রার্থীদের ৯টি মঞ্চে একসঙ্গে সামিল হলেও, এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ এই মিছিলে আসেননি।
- এ দিকে সুবিশাল মিছিলের জন্য আটকে পড়েন বহু যাত্রী। যদিও, এক বাস যাত্রী বলেন, “আমাদের অসুবিধা হচ্ছে ঠিকই। তবে তাঁরাও দীর্ঘদিন ধরে চাকরির জন্য লড়ছেন। তাঁদের দাবি ন্যায্য। মুখ্যমন্ত্রীর দেখা উচিত।”
- অপরদিকে কীতর্ন করতে দেখা যায় কয়েকজন চাকরি প্রার্থীদের। তাঁদের দাবি হরিনামের মাধ্যমে সরকারের কাছে নিজেদের আর্তনাদ তুলে ধরতে চাইছেন তাঁরা।
- ইতিমধ্যে এই মিছিল মৌলালি পেরিয়েছে। রুটির উপর এক চাকরি প্রার্থী ‘চাকরি চাই’ বলে লিখেছেন। তিনি বলেন, “আমরা ২০১৪ সালে প্রাথমিকে পাশ করেছি। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন আমাদের সবাইকে নিয়োগ দেবেন। তবে রুটি-রুজি উনি কেড়ে নিয়েছেন। সেই কারণে রুটির উপর চাকরি চাই লিখেছি।”
- এ দিকে আজ সকাল থেকেই শিয়ালদহ স্টেশনে জমায়েত করতে দেখা যায় চাকরি প্রার্থীদের। এত বড় জমায়েত সাম্প্রতিককালে দেখা যায়নি। পুলিশ প্রশাসন মজুত রয়েছেন।
- তবে আজকের এই আন্দোলনে সামিল হয়নি এসএলএসটি চাকরি প্রার্থীরা। তাঁরা ইতিমধ্যেই নিয়োগ নিয়ে শিক্ষামম্ন্তরী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে কথা বলেছেন। সেখানে তাঁদেরকে সময় দেওয়া হয়েছে। তাই তাঁরা চাইছেন এই আন্দোলন তাঁরা পৃথকভাবে চালাবেন। সেই কারণে এদিনের মহামিছিলে উপস্থিত ছিলেন না এসএলএসটি চাকরি প্রার্থীরা।
- এ দিন শিয়ালদহ থেকে ওয়াই চ্যানেল পর্যন্ত এই বিক্ষোভ চলবে। মিছিল করার অনুমতি দিয়েছে আদালত।
- এক বিক্ষোভকারী বলেন, “আমরা নবম থেকে দশম চাকরির প্রার্থীরা ৬৪৫ দিন ধরে বিক্ষোভ করছি। সরকার যখন এত মানবিক তাহলে নিয়োগ দিচ্ছে না কেন? কতদিন বসে থাকব রাস্তায়?”
- মীরাতুন নাহার বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে কোনও সরকার নেই। এখানে রয়েছে এক দলীয় শাসকদল। তাদের বিরোধীতা করার মতো কেউ নেই। আর বিরোধী দলগুলির সংঘবদ্ধ হওয়ার ক্ষমতা নেই। সেই কারণে এই সুযোগককে কাজে লাগিয়ে তারা মানুষকে তাঁদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। বিশেষ করে শিক্ষাক্ষেত্রে বঞ্চিত যাঁরা, তাঁদের সঙ্গে আমি হাঁটব।”