বদলে যাচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপ ডিপি, ‘অন’ হয়ে যাচ্ছে বন্ধ ফোন, চুঁচুড়ার চিকিৎসকের পরিবারে প্রতি মুহূর্তে চোখ রাখছে কে?

TV9 Bangla Digital | Edited By: তন্নিষ্ঠা ভাণ্ডারী

Aug 21, 2021 | 1:54 PM

আইফোন থেকে ফিচার ফোন, সবই ব্যবহার করেছেন তাঁরা। কোনও লাভ হয়নি। পরিচিতদের কাছে অশালীন মেসেজ বার ফোন কল যাচ্ছে যখন তখন।

বদলে যাচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপ ডিপি, অন হয়ে যাচ্ছে বন্ধ ফোন, চুঁচুড়ার চিকিৎসকের পরিবারে প্রতি মুহূর্তে চোখ রাখছে কে?
পুলিশের কাছে গিয়েও কোনও লাভ হয়নি

Follow Us

কলকাতা: ফোন হ্যাক হওয়ার অভিযোগ নতুন নয়। সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টও সহজেই চলে যায় হ্যাকারদের কবলে। তবে চুঁচুড়া বাসিন্দা পেশায় চিকিৎসক কল্যাণাশিস ঘোষ ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে যা ঘটেছে, তা শুনলে শিউরে উঠতে হয়। ফেসবুক থেকে হোয়াটস্যাপ সবটাই চালনা করছে অন্য কেউ। সেখানেই শেষ নয়, অভিযোগকারিণী তথা কল্যাণাশিস ঘোষের স্ত্রী অনামিকার ফোন থেকে কল চলে যাচ্ছে পরিচিত প্রত্যেকের ফোন, আনামিকার হোয়াটসঅ্যাপ ডিপি বদলে যাচ্ছে আপনা থেকেই। আর এই পরিস্থিতিতে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাদের ১২ বছরের মেয়ে। তাঁদের মেয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছেও অসময়ে যাচ্ছে ফোন, যাচ্ছে বিভ্রান্তিকর মেসেজ। রীতি মতো বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে গোটা পরিবারকে।

কল্যাণাশিস ঘোষ সরকারি হাসপাতালের চিকিত্‍সক। চুঁচুড়ায় থাকেন তাঁর স্ত্রী অনামিকা ও একমাত্র মেয়ে। এক বেসরকারি স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে মেয়ে। হ্যাক হয়ে গিয়েছে অনামিকার একের পর এক ফোন। বার বার ফোন বদলে বা সিম বদলেও কোনও লাভ হয়নি। হোয়াটসঅ্যাপ বা ফেসবুক থেকে মেসেজ যাচ্ছে পরিচিতদের কাছে। সমস্যা এড়াতে অনামিকা নিজের হোয়াটসঅ্যাপ বা ফেসবুক প্রোফাইল বন্ধ করে দিয়েছেন ইতিমধ্যেই। ভয়েস কল বা টেক্সট মেসেজে তাঁদের ফোন থেকে যে ধরনের বার্তা যাচ্ছে, তাতে শ্লীলতার মাত্রা নেই।

অনামিকা জানিয়েছেন, জুন মাসের মাঝামাঝি শুরু হয় এই উপদ্রব। ১৮ জুন ছিল অনামিকার জন্মদিন। সেই দিন থেকেই কল্যাণাশিস-অনামিকার জীবনে প্রবেশ করেন কোনও এক রহস্যময় ব্যক্তি। সেই আড়াল থেকে নিয়ন্ত্রণ করছে গোটা ঘোষ পরিবারকে। চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ছে প্রতি মুহূর্তে। সুখী সংসার ভেঙে তছনছ করে দিতে চাইছে। হ্যাকারের তাণ্ডব এমন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তাঁদের মেয়েকে অনলাইন ক্লাস থেকে বের করে দিয়েছেন শিক্ষকরা। ঘোষ দম্পতির অভিযোগ, প্রতি মুহূর্তে তাঁদের ওপর অজানা মানুষটি চোখ রাখছে। ঘরের কথা শুনে ফেলছে। সুইচড অফ করা ফোন নিমেষে অন করে ফেলছে আড়াল থেকে। অবস্থা এমন, জীবন শেষ করে দেওয়ার মতো ভাবনাও এসেছে ওঁদের মাথায়। কিন্তু কেন এমন হচ্ছে? কেন এভাবে টার্গেট? তাহলে কি কল্যাণাশিস বা অনামিকার সংসারে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করাটাই উদ্দেশ্য। অজান্তে তৈরি হয়েছে কোনও ত্রিকোণ? অনামিকার দাবি ১৩ বছরের দাম্পত্য শেষ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে তাঁদের। ১২ বছর ধরে ব্যবহার করা ফোন নম্বর বদলে ফেলেছেন অনামিকা। স্মার্টফোন ফেলে মায়ের কাছ থেকে এনেছেন ফিচার ফোন। তাতেও রেহাই নেই। এমনকি আইফোন ব্যবহার করেও কোনও লাভ হয়নি বলে দাবি অনামিকার। রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের সব দরজায় কড়া নেড়েছেন কল্যাণাশিস, অনামিকা। সব মেসেজ ও অন্যান্য প্রমাণ দিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন সাইবার সেলে। লালবাজার, ভবানীভবনেও গিয়েছেন তাঁরা।

সাইবার বিশেষজ্ঞরাও মনে করছেন এই ধরনের ঘটনা ঘটানো সম্ভব। তবে তদন্ত করে খুঁজে বের করা খুবই কঠিন। সাইবার বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘ভারতে না হলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশে এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে। এমন অনেক ডেস্কটপ অ্যাপ্লিকেশন আছে মাধ্যমে কলার আইডি সেট করা সম্ভব। আর তা দিয়ে এক ফোন থেকে আর এক ফোন নম্বরে চলে যাবে কল বা মেসেজ, অথচ দু’জনের কেউই হয়ত তাতে জড়িত থাকবেন না। তাঁর দাবি, এই ক্ষেত্রে দোষীকে খুঁজে বের করা বেশ কঠিন। ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে যদি হ্যাকিং হয়ে থাকে, তাহলে প্রচলিত নিয়মে দোষীকে খুঁজে বের করা কার্যত অসম্ভব বলে মনে করেন তিনি। এ ক্ষেত্রে ক্লাউড কলের মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে বলে তাঁর মত। আরও পড়ুন: সাত সকালে মাঠে পড়ে বিজেপি কর্মীর দেহ, পিটিয়ে খুনের অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে

Next Article