কলকাতা : অপ্রচার চলছে। ভুলভাল কথা বলা হচ্ছে হৈমন্তীর (Haimanti Ganguly) নামে। কয়েকদিন আগেই এ কথা বলেছিলেন গোপাল দলপতি। নিয়োগ দুর্নীতিতে (Recruitment Scam) হৈমন্তীর নাম কেন সামনে এল এ প্রশ্ন করতেই গোপাল দলপতির (Gopal Dalapati) স্পষ্ট উত্তর ছিল, “হৈমন্তী অসুস্থ। কয়েকদিনের মধ্যেই ও সকলের সামনে আসবে। অপ্রচারের জবাবও দেবে।” অবশেষে প্রতীক্ষার অবসান। সামনে এলেন হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়। টিভি-৯ বাংলার প্রশ্নের উত্তরে তাঁর স্পষ্ট জবাব নিয়োগ দুর্নীতিতে তাঁর কোনও যোগই নেই। এদিন টেলিফোনে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে হৈমন্তী বলেন, “আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখে নিন নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে আমার কোনও যোগ নেই। আপনারা তো সংবাদমাধ্যম। আপনারা খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন দূর দূর তাক নিয়ো কেলেঙ্কারির সঙ্গে আমার কোনও যোগ নেই।”
সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া কুন্তলের ঘোষের মুখে শোনা গিয়েছে গোপাল দলপতির স্ত্রী হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের (Haimanti Ganguly) নাম। তাঁর ফ্ল্যাটের সামনে থেকে বেশ কিছু রহস্যজনক কাগজ উদ্ধার হতেই আরও বাড়ে রহস্য। সূত্রের খবর, ওই সমস্ত কাগজে ছাপার অক্ষরে লেখা রয়েছে একাধিক সিরিয়াল নম্বর ও রোল নম্বরের মতোই কিছু সংখ্যা। যা নিয়ে দানা বেঁধেছে রহস্য। অনেকেই দাবি করেছিলেন ওটা চাকরির সুপারিশের লিস্ট। চাকরিপ্রার্থী তথা টেট আন্দোলনকারী অচিন্ত্য সামন্তের দাবি, হৈমন্তীর ফ্ল্যাটের সামনে পাওয়া নথিই প্রমাণ করে ব্যাপক হারে দুর্নীতি হয়েছে নিয়োগ প্রক্রিয়ায়। অনেককেই সুপারিশ করা হয়েছিল চাকরি পাইয়ে দেওয়ার জন্য।
যদিও এ প্রসঙ্গে হৈমন্তীর স্পষ্ট দাবি, “আমি দীর্ঘদিন আমার বাড়িতে ছিলাম না। কেউ যদি কোনও জিনিস আমার বাড়ির সামনে, আবর্জনায় বা বাড়ির সামনের রাস্তায় ফেলে আসেন, সেই দায় কী আমার?” প্রসঙ্গত, হৈমন্তীর সঙ্গে গোপাল দলপতির বিয়ে হয়েছিল ২০১১ সালের শেষ দিকে। এই হৈমন্তীর নামে মস্ত কোম্পানিও খুলেছিলেন গোপাল। এদিকে নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানোর আগে চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়েছে গোপালের। গিয়েছেন জেলেও। কিন্তু, গোপালের নাম যে নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে আসতে পারে সেই আভাস কী আগে পেয়েছিলেন হৈমন্তী? তাঁর স্পষ্ট উত্তর, “আমার দুনিয়াটা সম্পূর্ণ আলাদা। এই সম্পর্কে আমার কোনও আইডিয়া নিয়ে। আমি সারাদিন নিজের কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকি। ওনার সঙ্গে আমার এসব বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি।”
এমনকী তাঁর আরও দাবি কেরিয়ার গঠনের ক্ষেত্রে তিনি কোনওদিনই তাঁর স্বামী অর্থাৎ গোপাল দলপতির কোনও সাহায্যই নেননি। নেননি কোনও আর্থিক সাহায্যও। এরপরই কার্যত অভিযোগের সুরে তিনি বলেন, “কোনও তথ্যপ্রমাণ ছাড়া কেন আমার সামাজিক সম্মান নষ্ট করা হল? তথ্য-প্রমাণ হাতে নিয়ে এগুলো করা যেতে পারত। কেউ কোনও কথা বলে দিলে, তাঁর কথার ভিত্তিতে কারও সামাজিক সম্মান নষ্ট করার অধিকার কারও আছে? আমি কুন্তল ঘোষকে কোনওদিনই চিনতাম না। টিভিতেই প্রথম দেখেছি। আমাকে যেভাবে হেনস্থা করে হয়েছে তা আমি মেনে নিতে পারিনি। শুরুতে সংবাদমাধ্যমকে ফেস করার ক্ষমতা আমার ছিল না। আমি টিভি-৯ বাংলার মাধ্যমে এখন একটাই কথা সকলকে বলব তথ্য-প্রমাণ হাতে নিয়ে তবেই কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা উচিত। আমার মা-বাবা অতিসাধারণ। তাঁদেরকেও এই ঘটনার জন্য অনেক ভোগান্তি পোহাতে হল। আমি জনগণের কাছে হাতজোড় করে অনুরোধ করছি আমাকে আমার আগের জায়গা ফিরিয়ে দিন।”