কলকাতা: একটি নয়, দুটি নয়, চার চারটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ২৬ বছরের যুবক মেঘনাদ চন্দ্রকে। তারপরও বাঁচানো যায়নি তাঁকে। বেঁচে ফেরা তো দূরের কথা সামান্য চিকিৎসাও মেলেনি বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে পরিবারের তরফে। শহরের চার সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে ওই যুবকের মৃত্যু। এবার সেই হাসপাতালের কাছে রিপোর্ট তলব করল স্বাস্থ্য দফতর। এম আর বাঙুর, এসএসকেএম, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও এনআরএসের কাছে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। প্রথম তিনটি হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয়েছিল ওই রোগীকে। আর মৃত্যু হয় এনআরএস বা নীলরতন সরকার হাসপাতালে। ওই সব হাসপাতালের এমার্জেন্সি টিকিটে কাদের সই রয়েছে? কারা রেফার করেছেন? কেন রেফার করা হল? তা, জানতে চাইল স্বাস্থ্য ভবন। প্রথম তিন হাসপাতালের চিকিৎসকেরা কেন বুঝতে পারলেন না মেঘনাদের কী হয়েছে? সেই প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়েছে।
অভিযোগ মূলত দুটি। এক, এম আর বাঙুর, এসএসকেএম, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে কেন ওই রোগীর চিকিৎসা মিলল না? আর দ্বিতীয় প্রশ্ন উঠছে এনআরএসের ভূমিকা নিয়ে। এনআরএসের ঠিক কী হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখতে চায় স্বাস্থ্য ভবন। যদিও এই ঘটনার তদন্তে ইতিমধ্যেই একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এনআরএসে।
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার সকালে। টলিগঞ্জের বাসিন্দা মেঘনাদ চন্দ্র বাইক থেকে পড়ে গিয়ে পায়ে আঘাত পান সোমবার সন্ধ্যায়। যন্ত্রণা বাড়লে তাঁকে প্রথমে এর বাঙুরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে এসএসকেএম, তারপর ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, তারপর এনআরএসে নিয়ে যাওয়া হয়। ভোর তখন ৫ টা ৪০। এমার্জেন্সিতে নিয়ে যাওয়া হলে প্রথমে অস্থিবিভাগে দেখানো হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন হাড়ের কোনও সমস্যা নেই। জেনারেল সার্জারি বিভাগে পাঠানো হয় তাঁকে। সাড়ে ৬ টা এমার্জেন্সির সামনে ট্রলির ওপর শোয়ানো ছিল মেঘনাদকে। জেনারেল সার্জারি বিভাগে তখন কোনও চিকিৎস ছিলেন না। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে ও মৃত্যু হয়। এই ঘটনা শহরের গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালগুলির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।