কলকাতা : করোনা পরিস্থিতিতে গঙ্গাসাগর মেলা হলে সংক্রমণ ছড়াতে পারে ব্যাপক হারে। চিকিৎসক থেকে রাজনৈতিক দল, সব মহলেই এই প্রশ্ন উঠেছে। এবার সেই সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলায় রাজ্যের কাছে আদালত জানতে চাইল মেলা সম্পূর্ণ বন্ধ করা যায় কিনা। মঙ্গলবার গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধের আবেদন জানিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। বুধবার সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি জানতে চান মেলা বন্ধ করা কি সম্ভব? রাজ্য কী চায়?
প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে চলছে এই মামলার শুনানি। রাজ্য এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের স্বার্থে ও তাঁদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নেবে বলে আশা করছে আদালত। বৃহস্পতিবার এ্যাডভোকেট জেনারেল রাজ্যের তরফে বক্তব্য জানাবেন। মেলা সম্পূর্ণ বন্ধ করা যায় কি না তাও জানাতে বলা হয়েছে।
মামলার শুরুতেই এ দিন পশ্চিমবঙ্গ চিকিৎসক ফোরামের পক্ষ থেকে মামলায় অংশ হওয়ার আবেদন জানানো হয়। মামলাকারী অভিনন্দন মণ্ডল দক্ষিণ দমদমের একটি সেফ হোমে চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন। তিনি জানান তাঁর অভিজ্ঞতা ভয়ঙ্কর। তাঁর আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী জানান, কুম্ভের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম মেলা হয় গঙ্গা সাগরে। ১৫ লক্ষ মানুষের জনসমাগম হওয়ার কথা।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ৫০ শতাংশ পুলিশ শুধু গঙ্গাসাগরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন ডিউটি করেন। তাঁরা আক্রান্ত হলে আইন-শৃঙ্খলার কী হবে? সেই প্রশ্নও তোলেন আইনজীবী। তিনি আরও উল্লেখ করেন, সুপ্রিম কোর্টের কিছু নির্দেশে সাম্প্রতিককালে লাইভ স্ট্রিমিং-এর বিষয়ে উৎসাহিত করা হয়েছে। শুধু তাই নয় গঙ্গাসাগর মেলা আইনে বলা হয়েছে, রাজ্য সরকার মনে করলে সাগরের যে কোনও জায়গা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ইস্যু দেখিয়ে পদক্ষেপ করতে পারে। ড্রপলেট থেকে কী ভাবে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে, সেটাও উল্লেখ করেন আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী।
চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে আইনজীবী অনিরুদ্ধ চট্টোপাধ্যায় জানান, আসলে তাঁরা ডেল্টাকে ভয় পাচ্ছেন। গঙ্গাসাগরের কাছে হাসপাতালের পরিকাঠামো কি, তা জানতে চান তাঁরা। তিনি বলেন, কুম্ভ মেলার পর কী ভাবে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছিল তা দেখে শিক্ষা নেওয়া উচিৎ। ৪০০-৫০০ জন চিকিৎসক ইতিমধ্যেই আক্রান্ত। কী ভাবে স্বাস্থ্য পরিষেবা চালানো সম্ভব, সেই প্রশ্নও উঠে এসেছে। আইনজীবীরা এ দিন আদালতে বলেন, সাধুরা মাস্কে বিশ্বাসই করেন না। কে মাস্ক পরানোর দায়িত্ব নেবে?
প্রধান বিচারপতি এ দিন প্রশ্ন করেন, কত মানুষ আসতে পারেন। এজি উত্তরে জানান, গত বছরে ৭ লক্ষ ভক্তের সমাগম হয়েছিল। ওমিক্রনে ভয় নেই বলেই মেলা চলতে পারে কি? প্রশ্ন করেন বিচারপতির। এজি বলেন, এই ধরনের কিছু তিনি বলছেন না। হাইকোর্ট সিদ্ধান্ত নেবে কী হবে। এজি বলেন, ‘মেলা চালাতে চাইলে কী পদক্ষেপ করা যায়, তা জানাবে রাজ্য।’
আরও পড়ুন : Political meeting cancelled: পথ দেখাল উত্তর প্রদেশ, কোভিড আবহে সভা-সমাবেশ বাতিলের পথে রাজনৈতিক দলগুলি