সুমন মহাপাত্র
নয়াদিল্লি: ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের মামলায় আজ (সোমবার) শেষ শুনানি শুরু হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। আর শেষ শুনানির শুরুতেই বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী জানিয়ে দিলেন, যোগ্য ও অযোগ্যদের পৃথকীকরণ সম্ভব নয়।
প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে এদিন শুনানি চলছে। গত ২৭ জানুয়ারি শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দিয়েছিলেন, এই মামলায় ১০ ফেব্রুয়ারিই শেষ শুনানি। যোগ্য ও অযোগ্যদের পৃথক করা সম্ভব না হলে পুরো প্যানেল বাতিলের ইঙ্গিত দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
এদিন আইনজীবী মনিন্দর সিং বলেন, “এসএসসি বারবার বলেছে তারা যোগ্য-অযোগ্য পৃথকীকরণ করতে পারছে না। এসএসসি, বোর্ড, রাজ্য সরকার কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি। যোগ্য ও অযোগ্যের সংখ্যা কত, তা বলতে পারেনি।” তিনি সওয়াল করেন, “পুরনো প্যানেল বাতিল করে ফের নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া উচিত।”
অন্যদিকে, সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, “নায়সা আমাদের জানায় যে কোনও ডেটা নেই। তারপর আমরা ডেটা স্ক্যানটেক থেকে ডেটা সংগ্রহ করি। এরপর আমরা পঙ্কজ বনশলের (নায়সার প্রাক্তন কর্তা) কাছ থেকে ডেটা সংগ্রহ করি। দুটো ডেটাকে মিলিয়ে দেখি।”
সিবিআইয়ের আইনজীবী দাবি করেন, “ডেটা স্ক্যানটেক থেকে পাওয়া তথ্য ও পঙ্কজ বনশলের তথ্য মিলেছে। পঙ্কজ বনশলের কাছ থেকে পাওয়া ডেটা নির্ভুল।” সিবিআইয়ের আইনজীবী আরও বলেন, “এসএসসির কাছে যে ডেটা ছিল, তাতে কারসাজি হয়েছিল। আমাদের তদন্তে স্পষ্ট, পঙ্কজ বনশলের কাছে যে ডেটা রয়েছে, তাতে কারসাজি হয়নি।”
যে প্রার্থীরা সিলেক্ট হননি, তাঁদের পক্ষের আইনজীবী বিভা মাখিজা নিজের সওয়ালে বলেন, “চাকরিপ্রার্থীরা কত নম্বর পেয়েছেন, সেই সংক্রান্ত মেরিট লিস্ট কখনও প্রকাশ করা হয়নি। কলকাতা হাইকোর্ট এই মেরিট লিস্ট প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু তা মানা হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী, লিখিত পরীক্ষার পর মেরিট লিস্ট প্রকাশ করতে হয়। কারা ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাক পেলেন, তাঁদের তালিকা প্রকাশ করতে হয়। মোট শূন্য পদের চার গুণ বেশি প্রার্থীদের নিয়ে প্যানেল তৈরি করতে হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে একাধিক অনিয়ম হয়েছে।”
আইনজীবী বিভা মাখিজা আরও বলেন, “পঙ্কজ বনশলের ডেটার ভিত্তিতে নতুন মেধাতালিকা তৈরি হোক। সাদা ওএমআর যাঁদের, তাঁদের প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া হোক।”
প্রধান বিচারপতি তখন বলেন, “সিবিআই বলছে, বনশলের ডেটা প্রকৃত সত্য। কিন্তু এক্ষেত্রে আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি না এটাই প্রকৃত ডেটা। কারণ আমাদের হাতে অরিজিনাল মার্কসিট নেই। আমরা পঙ্কজ বনশলের ডেটাকেও সন্দেহ করছি।”