কলকাতা: ভুয়ো নথি তৈরি করা হত, তৈরি করা হয়েছিল খুব বড় প্ল্যান! মুর্শিদাবাদের গোথা স্কুলের ঘটনায় বড় ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। সেই মামলায় তদন্তভার দেওয়া সত্ত্বেও সিআইডি কাজ করেনি বলে এবার সরাসরি ভর্ৎসনা করলেন বিচারপতি। আদালতে উপস্থিত ডিআইজি সিআইডি-কে তিনি বলেন, ‘আপনার ওপর অনেক ভরসা করেছিলাম, আপনি কাজ করেননি।’ আপাতত সিআইডি-র হাতেই দায়িত্ব থাকলেও তদন্তের জন্য একটি নতুন কমিটিও গড়ে দিলেন বিচারপতি। সেই কমিটিতে থাকছেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের সচিব, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সচিব এবং শিক্ষা দফতরের সচিব।
সম্প্রতি গ্রেফতার হন মুর্শিদাবাদের গোথা হাইস্কুলের শিক্ষক অনিমেষ তিওয়ারি। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, নিয়োগপত্র ও সুপারিশ পত্র না থাকা সত্ত্বেও কোনও এক বিশেষ পন্থায় চাকরি পান তিনি। তিনি যে স্কুলে চাকরি পান, সেই স্কুলেরই প্রধান শিক্ষক ছিলেন তাঁর বাবা। বিচারপতির বক্তব্য, এটা একটা পৃথক ঘটনা নয়। এমন ঘটনার পিছনে একটা চক্র কাজ করত বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তিনি। কিন্তু সিআইডি যে পথে তদন্ত করেছে, তাতে কার্যত অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি বসু।
বৃহস্পতিবার মামলার শুনানিতে বিচারপতি সরাসরি বলেন, আশা করব সিআইডি কাউকে রক্ষা করার চেষ্টা করবে না। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, অভিযুক্তরা ভুয়ো নথি তৈরি করত, খুব বড় প্ল্যান করে করা হয়েছিল। তিনি উল্লেখ করেন, বোর্ড ও স্কুল সার্ভিস বেশ কিছু তথ্য দিয়েছে সিআইডি-কে, তারপরও কোনও কাজ হয়নি। সিআইডি-র কোনও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়নি, অপরাধের নকশা ঠিক কীভাবে হয়েছিল। এ ধরনের অপরাধ কীভাবে কমানো যায়, তার কোনও উপায়ও তদন্তকারীর সংস্থা উল্লেখ করেনি বলে জানিয়েছেন বিচারপতি।
তথ্য মুছে দেওয়া হতে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে বিচারপতি সিআইডি ডিআইজি সোমা দাসকে বলেন, ‘আপনার ওপর অনেক ভরসা করেছিলাম। কিন্তু আপনি কাজ করেননি। ক্যাজুয়াল ব্যবহার দেখা গিয়েছে। আরও সক্রিয় হওয়া দরকার।’ অন্যদিকে, রাজ্যের আইনজীবী রুদ্রদীপ্ত নন্দীও এই ঘটনার পিছনে বড় ষড়যন্ত্র থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন। হাওড়া ও মুর্শিদাবাদ দুটি ঘটনার সঙ্গে এই ঘটনার যোগ আছে, এমন তথ্যও সামনে এসেছে। আগামী ১ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।