কলকাতা: প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের (Primary Board) প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে (Manik Bhattacharya) ২ লক্ষ টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ৮ বছর পরও পরীক্ষার ফল জানায়নি পর্ষদ। এমনই অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক চাকরি প্রার্থী। সোমবার ছিল সেই মামলার শুনানি। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly) সেই মামলায় জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রাক্তন বোর্ড সভাপতিকে। ১৫ দিনের মধ্যে জরিমানার টাকা দিতে হবে মানিককে। বর্তমানে জেলবন্দি রয়েছেন মানিক। জেলেই তাঁকে আদালতের নোটিস দেওয়া হবে। প্রাথমিকে নিয়োগে দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিযোগের ভিত্তিতেই মানিককে গ্রেফতার করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। পরে কেন্দ্রীয় সংস্থার চার্জশিটে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ সামনে এসেছে পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিকের বিরুদ্ধে।
২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন মালারানি পাল নামে এক প্রার্থী। কিন্তু ওই পরীক্ষায় তিনি উত্তীর্ণ হয়েছেন কি না, তা পর্ষদ জানায়নি বলেই অভযোগ। মামলকারীর বক্তব্য, টেটের ফল জানতে না পারায় ২০১৬ এবং ২০২০ সালের দু’টি পরীক্ষাতেও অংশ নিতে পারেননি তিনি। এর ফলে তিনি বঞ্চিত হয়েছেন।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেন, পরীক্ষা দিয়ে ফল জানার অধিকার প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর রয়েছে। কিন্তু পর্ষদের শীর্ষপদে এমন এক ব্যক্তি ছিলেন, তাঁর জন্যই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এরপরই মানিককে জরিমানা ধার্য করে আদালত। মানিক যেহেতু প্রেসিডেন্সি জেলে রয়েছেন, তাই সেখানে হাইকোর্টের কপি নিয়ে যাবেন মামলকারীর আইনজীবী। আগামী ৩০ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
উল্লেখ্য, মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছে। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে মানিকের কথোপকথনও। তিনি যে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ ছিলেন, তা স্পষ্ট। মানিকের প্রায় ৮ কোটি টাকার সম্পত্তি ইতিমধ্যেই বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। তাঁর একগুচ্ছ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেনেও রয়েছে নজর। তাঁর ছেলের সংস্থার নামে টাকা তোলা হত, নিজের স্ত্রীর অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে টাকা রাখতেন, এমন সব অভিযোগও সামনে এসেছে।