কলকাতা: আগামী ২৪ ডিসেম্বর টেট পরীক্ষা। সেদিন পরীক্ষা কেন্দ্রের আশেপাশে সবকটি জেরক্সের দোকান থাকবে বন্ধ। এমনকি প্রত্যেক পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা মোবাইল নিয়ে ঢুকছেন কি না, তা নির্দিষ্ট মেশিনের মাধ্যমে স্ক্রিনিং করে দেখা হবে। কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হবে পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিকে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে প্রত্যেকটি পরীক্ষাকেন্দ্র এবং তার আশপাশের এলাকায়। বুধবার নবান্নে টেট প্রস্তুতি সংক্রান্ত এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে মুখ্য সচিব হরেকৃষ্ণ দ্বিবেদী, স্বরাষ্ট্র সচিব বি পি গোপালিকা, প্রাথমিক পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল, পরিবহন দফতরের শীর্ষকর্তারা, কলকাতা পুলিশ এবং রাজ্য পুলিশের শীর্ষকর্তারা, বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিক সহ একাধিক শীর্ষ কর্তা উপস্থিত ছিলেন। নবান্ন সূত্রে খবর, সেই বৈঠকেই এই সিদ্ধান্তগুলি নেওয়া হয়েছে।
মোবাইল নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ রুখতে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। কারণ এ দিনের বৈঠকে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, অনেকেই বিভিন্ন অসৎ উপায়ে লুকিয়ে মোবাইল নিয়ে প্রবেশ করতে পারেন পরীক্ষাকেন্দ্রে। তাই পরীক্ষাকেন্দ্র গুলির প্রবেশ পথ এবং পরবর্তী সময় অন্যান্যভাবে ও মোবাইল নিয়ে কেউ পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। পরীক্ষা কেন্দ্রের আশেপাশে যাতে কোন রকম ভিড় না হয় তার জন্য নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে সবকটি দোকান বন্ধ রাখা হবে। রাজ্যজুড়ে কয়েক লক্ষ পরীক্ষার্থী টেট দেবেন। তাই বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের মধ্যে যাতে পরীক্ষা কেন্দ্রগুলির না পড়ে তার জন্য বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে বিদ্যুৎ দফতরকে।
তবে সমস্যার জায়গা অন্যত্র। আগামী ২৪ ডিসেম্বর ব্রিগেড ময়দানে ১ লক্ষ মানুষের ভিড় হবে বলে ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে। সেদিন ওই ময়দানে গীতা পাঠ করা হবে। খোদ প্রধানমন্ত্রী আসার সম্ভাবনা রয়েছে ওই অনুষ্ঠানে। সে কারণেই রাস্তাঘাটের স্বাভাবিক গাড়ি চলাচল এবং শহরকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা দিতে কোন কোন বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন, তা কলকাতা পুলিশ এবং রাজ্য পুলিশকে সঠিকভাবে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্য সচিব এবং স্বরাষ্ট্র সচিব। এমনকি শহরে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাগুলি যাতে সক্রিয় থাকে, তার জন্য আগেভাগে সেগুলো পরীক্ষা করে নেওয়ার নির্দেশে দেওয়া হয়েছে এদিনের বৈঠকে।
যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর আসার বিষয়টি সরকারিভাবে এখনও জানানো হয়নি, তাই সম্ভবনা ধরেই প্রস্তুত হওয়ার জন্য কলকাতা পুলিশ এবং রাজ্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। ব্রিগেড সমাবেশ হলে পরীক্ষার্থীরা যাতে সঠিক সময় পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারেন, তার জন্য ট্রাফিক পরিষেবাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যানজট নিয়েই সব থেকে চিন্তিত এদিন বৈঠকে উপস্থিত কর্তারা। একই দিনে দু’টি হাইপ্রোফাইল ঘটনা। প্রধানমন্ত্রী কলকাতায় আসার ব্যাপারে সরকারিভাবে নিশ্চিত হলে চিন্তার ভাঁজ কলকাতা পুলিশ এবং রাজ্য পুলিশের মাথায় আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন বৈঠকে উপস্থিত কর্তারা। সে ক্ষেত্রে কি করণীয় হতে পারে, তার একটি রূপরেখা তৈরি করার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কলকাতা মেট্রো, পূর্ব রেল এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেলকে বাড়তি ট্রেন চালানোর জন্য বলা হবে বলে এদিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।