কলকাতা: মাছে-ভাতে বাঙালি। আর সেই মাছ যদি ইলিশ হয়? কথাই নেই। কিন্তু সেই ইলিশেরই আকাল। বর্ষার মুখে ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপ, নামখানায় গত দশ দিনে ইলিশ উঠেছে মাত্র ১৪০ টন। তিন-চার বছর আগেও যে সংখ্যা ছিল দু’-তিন গুণ। রুপোলি শস্য গেল কোথায়?
বাইরে ইলশে গুঁড়ি। বাড়িতে পাতে ইলিশ। বর্ষার শুরুতে এই কম্বিনেশনই তো চান ভোজনরসিক বাঙালি। কিন্তু তা আর হচ্ছে কোথায়! সেভাবে ইলিশের দেখা নেই।
বর্ষা নেমেছে। এই সময় বাজারে ইলিশের ঢালাও জোগান থাকত। কিন্তু তিন-চার বছর ধরে সেই আকাল চলছে। এবছর দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন আড়তে পর্যাপ্ত পরিমাণ ইলিশের জোগান নেই। ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপ, নামখানা, সর্বত্র একই ছবি।
সমুদ্রের আবহাওয়া খারাপ। ঢেউ উত্তাল। তাই ইলিশ জালে উঠছে না। খুব কম মাছ নিয়ে ফিরে আসছে ট্রলার।বর্ষা শুরু হলেও সমুদ্রের জল এখনও বেশি নোনা। বৃষ্টির পরিমাণ বাড়লে সমুদ্রের জলের নোনা ভাব কাটবে। কিছুটা মিষ্টি হবে জল। তখন ইলিশের ঝাঁকের দেখা মিলবে বলে আশা মত্স্যজীবীদের।
এ দিকে, রূপোলি শস্যের দামে চোখরাঙানি। তাই ইলিশ স্বাদের- সাধ জাগলেও, কেনার সাধ্য নেই। কলকাতার বিভিন্ন বাজারে ১ কেজির বেশি ওজনের ইলিশ বিকোচ্ছে ১ হাজার ৪০০ টাকায়। ওজন আরেকটু বাড়লেই তার দাম ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার। বর্ষা নামলেও, কোথায় গেল ইলিশ? কেনই বা এত তার দাম। কী বলছেন বিক্রেতারা?
এক বিক্রেতা বলেন, ‘লোকাল মাছ উঠেছে। ভাল মাছই উঠেছে। সেই মাছের দাম কম। আগের যেমন দাম হতো। তার তুলনায় কম দাম। খুব ভাল। এখন পদ্মার ইলিশ কম। টাটকা মাছ খেতে চাইছেন মানুষজন। দাম ১১০০ থেকে ১৫০০-র মধ্যে।’ এক ক্রেতা বলেন, ‘তুলনামূলক দাম এখন বেশি ইলিশের। পরে বর্ষা ভাল করে নামুক তখন দাম কমবে।’
রুপোলি শস্যের দেখা নেই। অকূল দরিয়ায় নৌকা ভাসিয়েও শূন্য হাতেই ফিরতে হচ্ছে মৎস্যজীবীদের। যদিও আশায় বাঁচে চাষা প্রবাদটিতেই ভরসা রাখছেন বিক্রেতারা। তাঁদের আসা, এখন জোগান কম থাকলেও বৃষ্টি ভালমত শুরু হলে ইলিশের জোগান বাড়বে। কমবে দামও।