কলকাতা: একদিকে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে তোলপাড় গোটা রাজ্য। তবে সেনাবাহিনীতে ভুয়ো নিয়োগ? সিবিআই-এর রিপোর্ট প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে দেশের নিরাপত্তা নিয়ে। সূত্রের খবর, সেনা থেকে আধা-সেনা, বেআইনি নিয়োগের শিকড় পৌঁছেছে অনেক গভীরে। সেনাবাহিনীতে বিদেশি নাগরিকের উপস্থিতির কথাও উড়িয়ে দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সংস্থা। বিষ্ণু রায় চৌধুরীর করা অভিযোগের ভিত্তিতে সম্প্রতি একটি মামলা হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। আদালতের নির্দেশে সিবিআই একটি রিপোর্ট পেশ করেছে। সেখানে গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, অনেক ক্ষেত্রেই ভুয়ো সার্টিফিকেট নিয়ে নিয়োগ হয়েছে। একাধিক রাজ্যের সেনা ছাউনিতে ছড়িয়ে আছে সেই নিয়োগ চক্রের জাল। সূত্রের খবর, এই বিষয়টিতে নজর দিচ্ছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও।
অভিযোগ, সেনাবাহিনীর এক শ্রেণির কর্মী সরাসরি এই বেআইনি নিয়োগ চক্রের সঙ্গে যুক্ত। এমনকী পদস্থ আধিকারিকদের যোগ উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। পাকিস্তানের কোনও নাগরিক ভারতীয় সেনা বা আধাসেনায় চাকরি করেন, এমন প্রমাণ এখনও নেই তবে অনেকেই যে জাল নথি দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, সে প্রমাণ উঠে এসেছে সিবিআই-এর অনুসন্ধানে। আরও বেশি তদন্তের প্রয়োজন বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় সংস্থা।
এর আগে পুনেতে এরকম চক্রের হদিশ মিলেছিল। সে ক্ষেত্রে অভিযোগ ছিল, পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে দেওয়া হত মোটা টাকার বিনিময়ে। আর এ রাজ্যে যে অনুসন্ধান হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে ভুয়ো শংসাপত্র দিয়ে হচ্ছে চাকরি। কারা করছে এই কাজ? গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, ছাউনির বাইরে থাকা দালালদের হাত রয়েছে এর পিছনে। আর সেই দালালদের সঙ্গে যোগ থাকতে পারে রাজ্য পুলিশ এবং রাজ্য সরকার কর্মীদের একাংশের।
তদন্ত রিপোর্টে উঠে এসেছে, দালালদের সঙ্গে যোগ রাখছে নীচু স্তরের সেনা কর্মীদের একটি অংশ। আর সেনাবাহিনীর কয়েকজন উচ্চপদস্থ আধিকারিক মসৃণ করে দেন গোটা পদ্ধতিটাকে। কেন্দ্রের নির্দেশে তদন্ত করছে ইনটেলিজেন্স ব্যুরোও। ইতিমধ্যেই বেআইনি নিয়োগে দেড় ডজন সেনা আধিকারিকের সরাসরি যোগ মিলেছে বলে সূত্রের খবর। এদের মধ্যে আবার ৫ জন আধিকারিক লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদমর্যাদার।
আধা সেনা বিশেষত সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর নিয়োগে এই ধরনের ভুয়ো নিয়োগ চক্র সক্রিয় বলেই অনুমান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। সিবিআই-এর কাছে বিভিন্ন সূত্র থেকে খবর এসেছে, বাংলাদেশি নাগরিকরা নথি জাল করে চাকরি পাচ্ছে আধা সেনায়।