“ব্রিলিয়ান্ট ছেলে ছিল গোপাল। ও সব বিষয়ে ও পারদর্শী ছিল। অঙ্ক, বাংলা, ইংরাজি, ভূগোল, বিজ্ঞান, এমনকী দর্শনেও ও ছিল তুখোড়।” একদিন আগেই গোপাল দলপতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে এ কথা বলেছিলেন তাঁর প্রথমপক্ষের শ্বশুর। তবে সেই গোপালই যে তাঁদের সর্বনাশ করেছিলেন সে কথাও বলেছিলেন তিনি। গোপাল দলপতি (Gopal Dalapati) যে ‘সুশিক্ষক’ ছিলেন সে বিষয়ে দরাজ সার্টিফিকেট দিচ্ছেন একসময় তাঁর কোচিংয়ে পড়া পড়ুয়ারাও। কিন্তু, গোপালের প্রথমপক্ষের শ্বশুরের দাবি, “বিশ্বাসঘাতকতা করেছে গোপাল। ভুল বুঝিয়ে আমার মেয়েকে বিয়ে করেছিল।” আর গোপালের সেই প্রেম শুরু হয়েছিল তাঁর কোচিংয়েই। সে কথা বলছেন গোপাল নিজেই। কিন্তু, হৈমন্তী কবে এলেন তাঁর জীবনে?
উত্তরে গোপাল বললেন, “প্রথম বিয়ে হয় ২০০৬ সালে। ডিভোর্স হয় ২০০৯ সালে। হৈমন্তীর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল ২০১১ সালের শেষ দিকে।” তবে বিয়ের তারিখ মনে করতে গিয়ে খানিক হোঁচট খেলেন গোপাল। তবে বিয়ের আগে দীর্ঘদিন হৈমন্তীর সঙ্গে প্রেম করেছিলেন গোপাল। কিন্তু, পরিচয় হয়েছিল কীভাবে? বয়সেরও তো একটা বড় ব্যবধান রয়েছে? গোপালের উত্তর, “আমি যে কোম্পানিতে চাকরি করি হৈমন্তী সেই কোম্পানিতে চাকরি করতে এসেছিল। ওই চিটফান্ড কোম্পানিতে। পেপারে একটা বিজ্ঞাপন দেখে এসেছিল। তারপর সেখানে চাকরি করতে করতেই আমার সঙ্গে পরিচয়। তারপর বিয়ে। তবে তখনও হৈমন্তী মডেলিং, অভিনয় করত না। তখন ও সবে কলেজের গণ্ডি পার করেছে। চাকরি খুঁজছিল। তখন কোনও এজেন্সির হাত ধরে আমাদের ওই সংস্থায় কাজ পায়। তারপরই আমাদের পরিচয়, প্রেম।”
প্রেম থেকে বিয়ে যাত্রাপথটা কেমন ছিল? মেনে নিয়েছিল দুজনের পরিবার? এ কথা বলতে খানিক আক্ষেপের সুর গোপালের গলায়। তাঁর স্পষ্ট দাবি, হৈমন্তীর পরিবার তাঁকে শুরুতে মেনে নিতে পারেনি। এমনকী তাঁর গ্রামের বাড়ির অবস্থা দেখেও তাঁদের পছন্দ হয়নি। যদিও টিউশানি করে হাজার হাজার টাকা রোজগার করলেও গ্রামের বাড়ির অবস্থা কেন ভাল হল না সেই উত্তর কিন্তু মেলেনি। হৈমন্তীর সঙ্গে বিয়ের প্রসঙ্গ উঠতেই খানিক হতাশার সুরেই গোপাল বলেন, “আমার সঙ্গে প্রেম-ভালবাসা হওয়ার পর ওর বাড়ির লোকজন পছন্দ করেনি আমাকে। আমাদের গ্রামের বাড়ির অবস্থা তো দেখেছেন। এসব জানার পর ওদের আমাকে পছন্দ হয়নি। আর হৈমন্তী একটা অভিজাত বাড়ির মেয়ে। কিন্তু, নিজের পায়ে দাঁড়াবে বলে চাকরি করছিল। আর ওর ছবিও দেখেছেন, আমার ছবিও দেখেছেন। আমাদের একটু বেমানান লাগত বলে বাড়ির লোকেরা প্রথমে মেনে নেয়নি।” যদিও নিয়োগ কেলেঙ্কারি মামলায় হৈমন্তীর কথা প্রচারের আলোয় আসার পর এখনও তাঁর সঙ্গে কথা বলে উঠতে পারেননি গোপাল। এদিন সে কথাও জানিয়েছেন তিনি নিজেই। এমনকী তাঁর কর্মকাণ্ড নিয়ে, একাধিক সংস্থার সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ নিয়েও হৈমন্তীর কোনও সম্যক ধারণা নেই বলেও দাবি করেছেন তিনি।