কলকাতা: অক্টোবরেই তৃতীয় ঢেউ (COVID 19) ! সতর্ক আগেই করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। এবার প্রধানমন্ত্রী দফতরে সেই রিপোর্ট জমা পড়ল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশ মেনে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে গঠিত বিশেষজ্ঞদের একটি কমিটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে। তৃতীয় ঢেউ এলে কোভিড আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসায় রাজ্য কতখানি প্রস্তুত, তার সবিস্তার বিবৃতি দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
রাজ্যের জেলা স্তর পর্যন্ত হাসপাতালগুলিতে বেড ও সিসিইউ-এর পরিষেবা বাড়ানো হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ১৫৫০ টি সিসিইউ বেডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২৮৪টি পিআইসিইউ বেড, ২৭০টি এনআইসিইউ বেডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সিসিইউ, পিআইসিইউ, এনআইসিইউ- সব মিলিয়ে ২৩৪৮টি বেডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ চিকিত্সক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। থাকছেন বিশিষ্ট শিশু বিশেষজ্ঞরাও। মেডিক্যাল কলেজগুলিতে বিশিষ্ট শিশু বিশেষজ্ঞ ও জেনারেল ফিজিশিয়ানের একটি করে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শিশুদের চিকিত্সার ক্ষেত্রে মূলত কী ধরনের ওষুধ ব্যবহার করা হবে, তার একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। আশা ও এএনএম কর্মীদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিক স্তরের চিকিৎসা কেন্দ্রগুলির সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের টেলি কনসালটেশনের মাধ্যমে পরামর্শের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এর আগে রাজ্যে কোভিড কাঠামোর কার্যকারিতা বুঝতে নতুন গবেষণা প্রকল্প শুরু করেছে রাজ্য সরকার। প্রকল্পের অভিভাবকত্বে রয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিত্ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের সঙ্গে ইন্ডিয়ান ইন্সস্টিটিউট অফ লিভার অ্যান্ড ডায়জেস্টিক সায়ন্সের যৌথ উদ্যোগে এই প্রকল্পের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন নোবেলজয়ী বাঙালি। ইতিমধ্যেই অভিজিত্ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সরকারি চিকিত্সকরা।
তৃতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলায় যে সব পরিকাঠামো গড়া হয়েছিল, তার কার্যকারিতা বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে। টেলি মেডিসিন, সেফ হোম-সহ নানান যে পরিষেবাগুলো চালু হয়েছে, কোভিড হাসপাতালগুলি পর্যবেক্ষণ করে দেখা হচ্ছে। অনেকক্ষেত্রেই অভিযোগ উঠছিল, সেফ হোমগুলি খালি পড়ে থাকছে। সে সব কিছুই খতিয়ে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের ওপর কতটা প্রভাব পড়বে?
এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই বলেন, “বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, পরিবারের বাকি সদস্যের পাশাপাশি শিশুরাও করোনা সংক্রমিত হচ্ছেন। তবে সেক্ষেত্রে উপসর্গ থাকছে না বা সামান্য জ্বর বা সর্দিকাশির মতো উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। এক্ষেত্রে দ্রুত রোগ চিহ্নিতকরণের উপরই জোর দিতে হবে। কারণ দেরিতে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়লে তা গুরুতর আকার ধারণ করার সম্ভাবনা তৈরি হয়। এছাড়াও করোনাভাইরাসের মধ্যে যদি অভিযোজন ঘটে নতুন কোনও রূপ তৈরি হয়, যা শিশুদের উপর বিশেষ প্রভাব ফেলে, তবে সেটিও চিন্তার কারণ হয়ে উঠতে পারে। কারণ বহু শিশুরই টিকাকরণ হয়নি। তবে আপাতভাবে শিশুদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ও তার জেরে মৃত্যুর হার সীমিতই রয়েছে।” আরও পড়ুন: তলানিতে নমুনা পরীক্ষা, সংক্রমণের হারও উর্ধ্বমুখী রাজ্যে, ভয় বাড়াচ্ছে তৃতীয় ঢেউয়ের ভ্রুকুটি