কলকাতা: করুণাময়ীর বিক্ষোভের আঁচে তপ্ত গোটা রাজ্যে। চাকরিপ্রার্থীদের বলপূর্বক অনশন মঞ্চ থেকে তুলে দেওয়ায় রাজ্যজুড়ে জোরদার আন্দোলনে নেমেছে বিরোধীরা। পথে নেমেছে বাম-বিজেপি (Left-BJP) সহ অন্য বিরোধী দলগুলি। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে পুলিশের (Police) ভূমিকা আদৌও কতটা ঠিক ছিল তা নিয়েও শুরু হয়ে গিয়েছে জোর চর্চা। এমনকী মহিলা আন্দোলনকারীদের যেভাবে গাড়িতে তোলা হয়েছে, যেভাবে তাঁদের চ্যাংদোলা করে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে কী বলছেন কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) প্রাক্তন পুলিশকর্তারা?
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে করুণাময়ী চত্বরে পুলিশি গতিবিধি বাড়লেও অ্যাকশন শুরু হয় মধ্যরাতে। ঘড়ির কাঁটা ১২টা পেরোতে না পেরোতেই মাঠে নেমে পড়ে পুলিশ। কার্যত চ্যাংদোলা করে তুলে দেওয়া হয় ২০১৪-র টেট পাশ করা অনশনকারীদের। টেনে হিঁচড়ে তোলা হয় পুলিশের গাড়িতে। মাত্র ২০ মিনিটের অপারেশনেই ফাঁকা হয়ে যায় গোটা এলাকা। এ প্রসঙ্গে কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন অ্যাসিট্যান্ট কমিশনার অনিল জানা বলেন, “আদালতের নির্দেশে পুলিশ এটা করেছে। আন্দোলনকারীদের দাবি তাঁদের চাকরি টাকার বিনিময়ে অন্য জায়গায় বিক্রি হয়ে গিয়েছে। তাই চাকরির দাবিতেই আন্দোলনকারীরা অবস্থানে বসেছিলেন। তবে ওরা তো আইন হাতে তুলে নেয়নি। গুন্ডামি করেনি। তবে আদালতের নির্দেশের কথা বললেও পুলিশ বলেনি কতটা দূর অবধি ১৪৪ ধারা জারি আছে। সেটা বললে ওরা তার বাইরে গিয়ে বসত। তবে পুলিশ কোর্টের অর্ডার নিয়ে এটা করেছে।”
কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন ডেপুটি কমিশনার সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়ও শোনা গেল একই সুর। তিনি বলেন, “স্বাভাবিকভাবে অন্যান্য আন্দোলন মোকাবিলার সঙ্গে চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনস্থল থেকে সরানোর মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। আন্দোলনকারীদের মধ্যে বেশিরভাগ মহিলা ছিলেন। ফলে তাঁদের আন্দোলনস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক ছিল পুলিশ। প্রচুর মহিলা পুলিশকর্মীও রাখা হয়েছিল। পুলিশ আদালতের নির্দেশ পালন করেছে। তারা জানত, ওখানে যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা চাকরিপ্রার্থী। তাঁরা নিরস্ত্র। ফলে জোর জবরদস্তি করার কোনও প্রশ্ন ওঠে না। চাকরিপ্রার্থীরাও তেমন জোর জবরদস্তি করেননি। ফলে পুলিশ বড় কোনও বাধার মুখে পড়েনি।”