Samik Bhattacharya: লেবার রুমে বাজপেয়ী, আদবানি না থাকলে তৃণমূলের জন্ম হত না: শমীক
Samik Bhattacharya on TMC foundation: শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "আবার বলছি আমরা সেদিন না থাকলে তৃণমূলে কংগ্রেসের জন্মই নিত না। আমাদের লড়াই ছিল কংগ্রেস এবং সিপিএমের বিরুদ্ধে। সেদিনের লড়াইয়ের প্রয়োজনে যা করা উচিত, আমরা তাই করেছি। আবার এখন যা করা কর্তব্য বলে মনে করি আমরা তাই করছি। পশ্চিমবঙ্গকে বাঁচাতে পথ একটাই। তৃণমূলের বিসর্জন।"

কলকাতা: ১৯৯৮ সালের ১ জানুয়ারি। কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে নতুন দল গঠন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই তৃণমূল কংগ্রেস গত ১৪ বছর বাংলায় ক্ষমতায় রয়েছে। কিন্তু, বিজেপি না থাকলে কি তৃণমূলের ‘জন্ম’ হত না? বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য সেই দাবিই করলেন। বললেন, “কংগ্রেসের প্রবল গর্ভ যন্ত্রণার সময় যদি লেবার রুমে অটলবিহারী বাজপেয়ি আর লালকৃষ্ণ আদবানি না থাকতেন, তাহলে তৃণমূল নামক শিশুটির জন্ম হত না।” শমীকের মন্তব্যের জবাব দিতে দেরি করলেন না তৃণমূলের কুণাল ঘোষ।
এদিন নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিন উপলক্ষে প্রথমে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে শমীক বলেন, “এই মুহূর্তে সারা ভারতে নরেন্দ্র মোদীর কোনও বিকল্প নেই। নরেন্দ্র মোদী যতদিন রাজনীতিতে থাকবেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবেই রাজনীতিতে থাকবেন। তাঁর স্বেচ্ছাবসর হবে। কারণ, নরেন্দ্র মোদী অপরাজেয়। তিনি এই মুহূর্তে একটি মিথ। তিনিই ঠিক করবেন তিনি কবে অবসর নেবেন। ভারতবর্ষকে নিজের পায়ে দাঁড় করিয়েছেন।”
এরপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। সাংবাদিকরা বলেন, আপনি কি মনে করেন এই রাজ্যেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিকল্প নেই? আর এই প্রশ্নের উত্তরে শমীক বলেন, “এটা আসলে কিছু বামপন্থীর প্রচার। তারা গতবার নোট ভোট টু বিজেপি প্রচার করেছিল। এবার গোপনে প্রচার করছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও বিকল্প নেই। নিজেদের আদর্শ বিচ্যুতি হয়ে তৃণমূলকে টিকিয়ে রাখাটাই রাজ্যের বামপন্থীদের সবচেয়ে বড় লক্ষ্য। কিন্তু এরা জানে না তৃণমূলের অপশাসন শেষ না হলে বামেরা কোনওদিনই প্রাসঙ্গিক হবে না।”
বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে প্রশ্ন করা হয়, বামেদের সরাতে আপনারা তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছিলেন। তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হৃদয়ে রেখেছিলেন? প্রশ্ন শুনে শমীকের জবাব, “আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হৃদয়ে রাখিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের জন্ম দিয়েছি। আমরা কংগ্রেসকে ভেঙে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের জন্ম দিয়েছি।” পরক্ষণেই তিনি অবশ্য বলেন, “আমরা তৃণমূলকে জন্ম দিইনি। আমরা জন্মের সময় উপস্থিত ছিলাম। কংগ্রেসের প্রবল গর্ভ যন্ত্রণার সময় যদি লেবার রুমে অটলবিহারী বাজপেয়ি আর লালকৃষ্ণ আদবানি না থাকতেন, তাহলে তৃণমূল নামক শিশুটির জন্ম হত না।”
বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে প্রশ্ন করা হয়, তৃণমূল কংগ্রেসের ‘জন্ম’ দিয়ে কি এখন মনে হচ্ছে ভুল করেছেন? উত্তর তিনি বলেন, “আবার বলছি আমরা সেদিন না থাকলে তৃণমূলে কংগ্রেসের জন্মই নিত না। আমাদের লড়াই ছিল কংগ্রেস এবং সিপিএমের বিরুদ্ধে। সেদিনের লড়াইয়ের প্রয়োজনে যা করা উচিত, আমরা তাই করেছি। আবার এখন যা করা কর্তব্য বলে মনে করি আমরা তাই করছি। পশ্চিমবঙ্গকে বাঁচাতে পথ একটাই। তৃণমূলের বিসর্জন। আমাদের লক্ষ্যে আমরা অবিচল। আমরা বলেছি, কংগ্রেস মুক্ত ভারত। তার মানে কংগ্রেসকে সরিয়ে দেওয়া নয়। কংগ্রেসের সংস্কৃতি মুক্ত ভারত।”
বিজেপির রাজ্য সভাপতির বক্তব্যের জবাব দিতে দেরি করেনি তৃণমূল। শাসকদলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “এগুলো কথার জাগলারি। তৃণমূল কংগ্রেস তৃণমূল কংগ্রেসের মতোই আছে। বাংলাজুড়ে আছে। শুধু বিজেপি বাংলায় নেই। বাংলায় দুর্বল। আবার হারবে। সুতরাং, এগুলো নিজেদের হতাশা। নিজেদের ব্যর্থতা। কথার জাগলারি দিয়ে ঘুরিয়ে লাভ নেই। বিজেপির যেটুকু ভোট শতাংশ, তা তো সিপিএমের দেওয়া। তৃণমূলের ভোট কমেনি। সিপিএমের যে ভোটটা কমেছে, সেটাই বিজেপি পেয়েছে। দিলীপ ঘোষ সভাপতি থাকাকালীন বিজেপির যা ছিল, সেটা এখন কমছে।”
