কলকাতা: গত সপ্তাহেই দু’দিনের ভারত সফর করে গিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করছেন। আর তারপর থেকেই ফের চর্চায় ভারত-বাংলাদেশ জলবণ্টন ইস্য়ু। তৃণমূলের তরফে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, জলবণ্টন চুক্তি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি। যদিও সেই অভিযোগ মানতে নারাজ কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে, এমনই দাবি উঠে আসছে। এসবের মধ্যেই এবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে রাজ্য সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট দাবি, কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকে যে রিপোর্ট জমা পড়েছিল, তাতে রাজ্য সরকারের সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির কোনও প্রতিফলন নেই।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে পাওয়া তথ্য তুলে ধরে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘যে চিঠির কথা কেন্দ্র এখন বলছে, সেটি ২০২৩ সালের ২৪ জুলাইয়ের। কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রক একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করেছিল। মোট ১২ জন সদস্যের টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তার মধ্যে একজন ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের চিফ ইঞ্জিনিয়ার পদের।’ এরপর মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টার আরও সংযোজন, ‘সেই কমিটি কেন্দ্রীয় জল কমিশনকে তাদের রিপোর্ট দিয়েছিল, যেটা কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকে জমা পড়েছিল। ওরা বলছে রাজ্য সরকারের চিফ ইঞ্জিনিয়ার তাঁর মত দিয়েছেন সেখানে। কিন্তু চিফ ইঞ্জিনিয়ারের কাছ থেকে দুই-একটি ছোট টেকনিক্যাল ইনপুট ছাড়া কিছু চাওয়া হয়নি। অনলাইন মিটিংয়ে ও পরে ইমেলে দুই একটি ছোট টেকনিক্যাল ইনপুট ছাড়া এই রিপোর্টে রাজ্যের কিছু প্রতিফলিত হয়নি। এই রিপর্টে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলনের কোনও প্রয়াস করে না।’
আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানিয়েছেন, জলশক্তি মন্ত্রক এই কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে কোনও চিঠি দেয়নি, কোনও আলোচনাও করেনি। অতীতে গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক জলবণ্টন সংক্রান্ত ও রাজ্যের মানুষের অন্ন-বস্ত্র-সংস্থানের সঙ্গে যুক্ত নদীক্ষয়, নদী ভাঙনের যে সব কথা মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেছেন, টেকনিক্যাল রিপোর্টে তার কোনও উল্লেখ নেই। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নীতি নির্ধারক স্তরের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি নির্ধারক স্তরের কোনো আলোচনা নেই এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভারত-বাংলাদেশ জলবণ্টনের ইস্য়ুটি নিয়ে।