কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে সবথেকে বেশি জোরাল হচ্ছে র্যাগিং তত্ত্ব। বাংলা বিভাগের প্রথমবর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডু। নদিয়ার বগুলার ছেলে। দু’চোখে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি হয়েছিল দেশের অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। বুধবার সেই বিশ্ববিদ্যালয়েরই মেন হস্টেলের তিনতলা থেকে পড়ে মৃত্যু হয় তাঁর। রাত সাড়ে ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে এই ঘটনা বলে সূত্রের খবর। এরপরই পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে বুধবার ঘটনার দিন রাতে ভয়ে ভয়ে ছিলেন স্বপ্নদীপ। এমনও সূত্রের খবর, পুলিশকে স্বপ্নদীপের সহপাঠীদের একাংশ জানিয়েছেন, সেদিন রাতে বারবার ওই ছাত্র বলেছিলেন, ‘আই অ্যাম নট আ গে’। অর্থাৎ ‘আমি সমকামী নই’। প্রশ্ন উঠছে, সত্যিই যদি এমন কথা ওই ছাত্র বলে থাকেন তা হলে তার নেপথ্যে কারণ কী? এরকম কোনও তত্ত্বকে সামনে রেখে কি স্বপ্নদীপকে র্যাগিং করা হচ্ছিল, উঠছে সে প্রশ্নও। কলকাতা পুলিশ একদিকে তদন্ত করছে। মেন হস্টেলের বেশ কয়েকজন পুলিশের বিশেষ নজরেও রয়েছে। তালিকায় আছেন, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্রও। সূত্রের খবর, পুলিশ ১০ ছাত্রকে থানায় ডেকেছিল। একজনও আসেনি। কিন্তু পুলিশি তলব এড়ানোর কারণ? বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটিও তদন্ত শুরু করেছে।
ইতিমধ্যেই যাদবপুরের প্রথমবর্ষের ছাত্রমৃত্যুতে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে যাদবপুর থানায়। স্বপ্নদীপের বাবা রমাপ্রসাদ কুণ্ডু লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তারপরই পুলিশ ৩০২ ধারায় তদন্ত শুরু করেছে। যা খুনের অভিযোগ। ইতিমধ্যেই যাদবপুরের পুলিশ নিহত ছাত্রের ১৫-২০ জন সহপাঠীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। মূলত সেদিন রাতে যাঁরা হস্টেলে ছিলেন ও যাঁরা স্বপ্নদীপের সহপাঠী, তাঁদেরই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কলকাতা পুলিশের একটি বিশেষ দলও নদিয়ায় পৌঁছয়। স্বপ্নদীপের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে তারা। পুরনো বন্ধুদের সঙ্গেও কথা বলে।
সূত্রের খবর, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অব স্টুডেন্টস ও হস্টেল সুপারিনটেনডেন্টকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চলেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবারই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। এরপরই আজ শুক্রবার যাদবপুরের অধ্যাপকদের রাজভবনে ডেকে পাঠান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সূত্রের খবর, রাজ্যপাল অ্যান্টি র্যাগিং বৈঠক করছেন। সেখানে দু’ জন চিকিৎসককেও ডাকা হয়েছে। এরমধ্যে একজন মনোরোগ চিকিৎসক, একজন মনোবিদ রয়েছেন।