কলকাতা: রাজ্যপাল তথা আচার্যের সায় ছিল না। তারপরও ২৪ ডিসেম্বরের সূচি মেনে সমাবর্তন হয়েছে। তাতেই যাদবপুর যেন রাজরোষে। কিন্তু, পাসআউটদের কী দোষ? উঠেছে সেই প্রশ্ন। এরইমধ্যে সমাবর্তন নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (C V Ananda Bose)। সাফ বলছেন, যাদবপুরের সমাবর্তন বেআইনি। তবে কি যে ডিগ্রি পড়ুয়াদের দেওয়া হয়েছে তা বৈধতা পাবে না? সমস্যার মুখে পড়বে আগামীর ভবিষ্যৎ? রাজ্যপাল বলছেন, আচার্য হিসাবে আদালতে যাওয়ার রাস্তা খোলা আছে। কিন্তু পড়ুয়াদের অসুবিধা হতে পারে। তাই এই অবৈধ ডিগ্রি প্রদানকে কী করে বৈধ করা যায় তার জন্য আমি আইনি পরামর্শ নিচ্ছি।
প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকারের অনুমোদন পাওয়ার পর চব্বিশে ডিসেম্বরের সমাবর্তন নিশ্চিত করে ফেলেছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তেইশে ডিসেম্বরের রাতে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছিল পুরোদমে। তখনই যেন আচমকা বাজ পড়ে যাদবপুরের মাথায়। সমাবর্তনের কয়েকঘণ্টা আগে রাতারাতি অন্তবর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউকে পদ থেকে সরিয়ে দেন আচার্য। তাতেই সমাবর্তন নিয়ে দেখা দিয়েছিল সিঁদুরে মেঘ। যদিও শেষ পর্যন্ত কোর্ট মিটিংয়ের পর ‘বিশেষ ক্ষমতা’ নিয়ে সমাবর্তনে হাজির ছিলেন বুদ্ধদেব। কিন্তু, তাঁর বিরুদ্ধে যে ‘অনৈতিক’ কাজের, ‘দুর্নীতির’ অভিযোগ তোলা হয়েছে তা ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। স্পষ্ট বলেছিলেন, “আমি কোনও অপরাধ করেছি বলে তো মনে হচ্ছে না।” খানিকটা অভিমানের সুরেই বলেছিলেন, “আমি তো আমার মনুষ্যত্ব খুইয়ে কিছু করব না।”
তবে বুদ্ধদেব সমাবর্তনে হাজির থাকলেও পৌরহিত্য করেননি। সেই দায়িত্ব নিজেই ঘোষণা করে তুলে দেন সহ-উপাচার্যের হাতে। এ নিয়ে যাদবপুরের কোর্টের সদস্যদের দাবি ছিল, ভবিষ্যতে যাতে পড়ুয়াদের ডিগ্রি নিয়ে কোনও গোলযোগ দেখা না যায় সে কারণেই সহ উপাচার্য অমিতাভ দত্ত সমাবর্তনে পৌরহিত্য করেন। যদিও বুদ্ধদেবকে সরানো ঠিক বলেই মত রাজভবনের। রাজ্যপাল বলছেন, উপাচার্য পদ পেয়ে লোভী হয়ে উঠেছিলেন। উপরন্তু আচার্যের কথা অমান্য করেছেন বলেই বুদ্ধদেব সাউকে উপাচার্য পদ থেকে সরানো হয়েছে।