কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হস্টেলের বি, সি ও ডি ব্লকের হস্টেল সুপার দীপায়ন দত্ত। এই হস্টেলেরই এ-টু ব্লকে থাকত সেই বিএ প্রথম বর্ষের সেই ছাত্র, যার অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এই মুহূর্তে তোলপাড় রাজ্য। দীপায়ন এ-টু হস্টেলের সুপার নন। তবে ৯ অগস্ট রাতে কী ঘটেছিল মনে আছে তাঁর। দীপায়ন দত্ত বলেন, “সেদিন ঘরে শুয়ে পড়েছিলাম। রাত ১২টা ৭ বাজে, সুপারিনটেনডেন্ট গৌতম মুখোপাধ্যায় আমাকে ফোন করেন। বললেন, আপনাদের মেইন হস্টেলের কোনও একটা ব্লক থেকে কোনও একজন ছাত্র পড়ে গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে আমি নীচে আসি। তবে তখন গেট বন্ধ, ছেলেটাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছে।” সকলে সে সময় খুব হইচই করছিল, ছোটাছুটি করছিল, দেখেছেন তিনি। আরও একটা জিনিস, এমন অস্থির পরিস্থিতি, সকলে ছুটছেন, অথচ সে সময় হস্টেলের গেটটা কিন্তু বন্ধ করেই রাখা ছিল।
পুলিশের প্রবেশ রুখতেই সেই গেট আটকে রাখা হয়েছে বলে ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে পুলিশ এফআইআরও করেছে। তবে দীপায়ন দত্ত বলেন, “পুলিশ ঢুকতে চেয়েছিল কি না আমি জানি না। নিরাপত্তার দায়িত্বে যাঁরা এটা তাঁদের বলার কথা।” আর রাতে যে জিবি মিটিংয়ের অভিযোগ? দীপায়ন সেটাও বলতে পারছেন না। তিনি বলেন, সে সময় বৃষ্টি হচ্ছিল। থামতেই কেপিসি হাসপাতালে চলে যান তিনি। উল্লেখ্য, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের একেবারে পাশেই এই হাসপাতাল। সেখানেই ভর্তি ছিলেন প্রথম বর্ষের সেই ছাত্র।
বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের বিষয়ে দীপায়ন বলেন, “আমার ব্লকে কিন্তু জল নিয়ে আয় বা খাবার নিয়ে আয় এরকমই শুনি। আর নেশা ছেলেরা ঘরে করত। কেউ কেউ বাইরে করত। নেশার একেবারে গোল করে আসর বসছে, এমন কিছু দেখিনি কোনওদিন। তবে বোতল পড়ে থাকত।”
তাঁর ব্লকে র্যাগিং হয় না, দাবি দীপায়নের। তবে ‘ইন্ট্রো’ কালচার রয়েছে তাঁর ব্লকেও। কীরকম সেই পর্যায়? দীপায়ন বলছেন, নিজের সম্পর্কে বলতে বলা হত। জুনিয়ররা কখনও কখনও সিনিয়রের ঘরে যেত ইন্ট্রো দিতে। তদন্ত কমিটির ডাকা বৈঠকে ডাক পড়েছিল দীপায়ন দত্তরও। তিনি গিয়েছিলেন। সেদিন রাতে কী হয়েছিল জানতে চাওয়া হয়। যা হয়েছিল, সেটাই জানিয়েছেন বলে দাবি করেন।