কলকাতা: যাদবপুরের মেন হস্টেলের তিনতলা থেকে পড়ে পড়ুয়ার মৃত্যু ঘিরে সারা রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হচ্ছে। শাসক-বিরোধী সব পক্ষই একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলতে শুরু করেছে। আর এসবের মধ্যেই যাদবপুরের পরিস্থিতি নিয়ে সরব তৃণমূল নেতা তথা বর্ষীয়ান আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ‘বহিরাগতদের’ আনাগোনা নিয়ে বেশ চিন্তিত কল্যাণ। বৃহস্পতিবার কলকাতা বিমানবন্দরের বাইরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বললেন, ‘বাইরের লোক সেখানে যাচ্ছে, বেআইনি কাজ হচ্ছে, অনৈতিক কাজ হচ্ছে… এই প্রশাসনিক দিকগুলি দেখার জন্য কেউ নেই। আমি তো আগেও বলেছি, আচার্য কি শুধু সহউপাচার্য নিয়োগ করার জন্য?’
একইসঙ্গে গ্রামাঞ্চল থেকে কিংবা মফঃস্বল থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে আসা ছেলে-মেয়েদের নিয়েও দুশ্চিন্তা রয়েছে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনে। তাঁর বক্তব্য, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম গোটা বিশ্বে রয়েছে। সেক্ষেত্রে, রাজ্যের অনেক গ্রাম ও মফঃস্বলের পড়ুয়ারা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি আকর্ষিত হন। কল্যাণের কথায়, প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল কিংবা মফঃস্বলের দিক থেকে আসা পড়ুয়ারা খুবই সরল-সাধাসিধে ধরনের হন। তাঁদের মধ্যে কোনও জটিলতা থাকে না। এসব পড়ুয়ারা অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায় কারও না কারও ভরসায় যাদবপুরে আসেন। কল্যাণবাবুর কথায়, ‘হয়ত পরিচিত কারও ভরসায় বা পাড়ার দাদার ভরসায়’। আর তারপর এখানে এসে এইসব ঘটনার শিকার হন ওই পড়ুয়ারা। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘গ্রাম ও মফঃস্বল থেকে আসা পড়ুয়ারাই এসব ঘটনার শিকার হচ্ছেন।’
উল্লেখ্য, যাদবপুুরের পড়ুয়া মৃত্যুর পর বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগতদের আনাগোনা নিয়ে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। শিক্ষামহলের একাংশ থেকে শুরু করে রাজ্যের বিভিন্ন স্তরের বিশিষ্ট মানুষজনরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। কেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সিসিটিভি নজরদারির আওতায় নেই, তা নিয়েও বিস্তর প্রশ্ন উঠেছে। এসবের মধ্যেই অবশ্য টনক নড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু সাংবাদিক বৈঠক ডেকে জানিয়েছেন, ক্যাম্পাসে সুরা ও মাদক নিয়ে কেউ ধরা পড়লে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।