কলকাতা: জলসার জন্য চাঁদার জুলুমবাজি ঘিরে বুধবার রাত থেকেই দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে যোধপুর পার্ক (Jodhpur Park) এলাকা। একটি ক্যাফের মালিককে হেনস্থার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেফতারও করে লেক থানার পুলিশ। ধৃতদের শুক্রবার আলিপুর আদালতে তোলা হয়। যদিও পাঁচজনই জামিন পেয়ে যান। অভিযোগকারী তরুণী স্বরলিপি চট্টোপাধ্যায়র দাবি, অভিযুক্তরা গ্রেফতার হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি এখনও। এখনও নানাভাবে অপদস্থ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সোশাল মিডিয়ায় তাঁর কফিশপ নিয়ে মিথ্যা খবরও রটানো হচ্ছে বলেই অভিযোগ উঠেছে। একইসঙ্গে স্বরলিপির দাবি, কিছু যুবক বাইক নিয়ে তাঁর ক্যাফের বাইরে ঘোরাফেরা করছে। অভিযোগকারী জানান, এই ঘটনার যথাযথ বিচার চান তিনি। আগামিদিনে কেউ যেন এই ধরনের জুলুমবাজির শিকার না হয় সে কারণেই এই বিচারের আবেদন বলে দাবি তাঁর।
সূত্রের খবর, যোধপুর পার্কে একটি জলসার আয়োজন করা হবে। সে কারণেই এই চাঁদা চেয়ে জুলুমবাজি করা হয়। বিপুল টাকা খরচ করে প্রতি বছর এই উৎসব যোধপুর পার্কে হয়। তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের ভূমিকা নিয়েও এখানে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ, টাকার জন্য স্থানীয় তৃণমূল নেতা, কর্মীরাই এই জুলুমে মদত দিয়েছেন। স্বরলিপির কথায়, “বুধবার সাড়ে ৯টা নাগাদ ১৪-১৫ জন লোক হু হু করে ক্যাফের ভিতর ঢুকে পড়ে। আমাকে বাইরে আসতে বলে। আমিও ফোন নিয়ে যাই এবং ভিডিয়ো করা শুরু করি। এরপরই আমাকে হুমকি দিতে শুরু করে, ‘আপনি ভিডিয়ো করছেন? এত বড় সাহস আপনার’। এরপরই আমার হাত মুচড়ে মোবাইল ফোনটা কেড়ে নেয়।”
স্বরলিপির দাবি, এই দলের মধ্যে সবার সামনে যিনি ছিলেন তিনি বলেন, “আমি বিজয় দত্ত। কোনও পুলিশ প্রশাসন কিছু না। আমরা কাউন্সিলরের লোক।” জানা গিয়েছে, এই বিজয় দত্ত যোধপুর পার্ক উৎসবের মূল আয়োজক। প্রাক্তন কাউন্সিলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠও তিনি। এলাকায় দাপুটে নেতা হিসাবে তাঁর পরিচিতি রয়েছে।
এ বিষয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “কেউ অভিযোগ জানাবেন। সেই অভিযোগ জানানোর জন্যও হুমকি দেওয়া হয়েছে। মহিলা কমিশন বলেছে থানায় যেতে। থানায় যাওয়া আসার পথেও হুমকি দেওয়া হয়েছে। কলকাতা শহরের কেন্দ্রস্থলের যদি এই অবস্থা হয়, সারা রাজ্যে কী ঘটছে।”
বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যের মতে, “এটা আবার অভিযোগের কী আছে? এটা কোনও ব্যতীক্রমী ঘটনা নাকি? এটাই তো স্বাভাবিক।” যদিও এই ঘটনায় এলাকার বিধায়ক দেবাশিস কুমার বলেন, “যা হয়েছে তা অত্যন্ত অন্যায় হয়েছে। পুলিশকে ধন্যবাদ কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। আমি এটুকুই বলতে পারি এলাকার বিধায়ক হিসাবে নিশ্চিন্ত মনে ওনারা ব্যবসা করুন। কোনও সমস্যা হলে আমাদের দায়িত্ব।”
অন্যদিকে যে ওয়ার্ডে এই ঘটনা, সেই ৯৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মৌসুমী দাস বলেন, “আমি বিষয়টা কিছুই জানতাম না। আমাকে এখানে জড়াবেন না। আমি কোনওরকম টাকা তোলাকে সমর্থন করি না। ওরা আমার অনুগামী নয়। আমি পার্টিতে নতুন, তাই আমার অনুগামী তৈরি হয়নি।”
আরও পড়ুন: RSS Sakha: হঠাৎ করে রাজ্যে বন্ধ আরএসএসের হাজারখানেক শাখা! নেপথ্যে কি বিজেপির কোন্দল?