কলকাতা: ৯ অগস্টের পর থেকে উত্তাল এ রাজ্য। তিলোত্তমার ঘটনার ন্যায় বিচার চেয়ে পথে চিকিৎসকদের একাংশ। এই নিয়ে প্রতিদিন রাজনীতির কচকচানি কম হচ্ছে না। তবে রুঢ় বাস্তব তিলোত্তমা আর নেই! তবে প্রতিমুহূর্তে-প্রতিদিন তাঁকে মনে করছেন তাঁর মতোই আরও সকল চিকিৎসক পড়ুয়ারা। শনিবার থিসিস পেপার জমা দিয়েছেন রুমেলিকা কুমার। তবে তিনি তা উৎসর্গ করেছেন তিলোত্তমাকে। এমনকী থিসিস পেপারে লিখেছেন ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান। কারণ, রুমেলিকা ভুলতে পারেননি যে, আজ তিলোত্তমা যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে তিনিও এমনভাবে থিসিস পেপার জমা করতেন। কিন্তু তা হল না…আর কোনও দিনও হবে না…!
রুমেলিকা শনিবার টিভি৯ বাংলাকে বলেন, “আমি থার্ড ইয়ার। ও সেকেন্ড ইয়ার ছিল। দুদিন পর এমন একটা থিসিস ও সাবমিট করত। থিসিস আমাদের জীবনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ মাইল স্টোন। এটার পর আমরা পরীক্ষায় বসি। কোথাও গিয়ে মনে হয়েছিল তিলোত্তমাকে এটা করতে দেওয়া হল না। সেও তো কিছু ভেবেছিল। একটা টপিকও ভেবেছিল। তবে তাঁর স্বপ্নকে সম্মান দিতে, তিলোত্তমাকে ভুলে না যেতেই এই সিদ্ধান্ত।”
এই বিষয়ে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলেও একটি পোস্ট করেন রুমেলিকা। সেখানে বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা লেখার পাশাপাশি প্রসঙ্গ তুলে আনলেন তিলোত্তমা। তিনিও আজ রুমেলিকার মতোই থিসিস পেপার জমা দিতেন। মৃত পড়ুয়ার বাবা-মা সব সময়ই বলতেন, ‘মেয়ে বড় ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখত। করোনার সময়ও বিনামূল্যে পাড়ার অনেক অসুস্থ মানুষের সেবা করেছে…। তবে সে স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল।’
রুমেলিকা লিখেছেন, ‘যখন থিসিস প্রিন্ট করাচ্ছিলাম তখন একটা জিনিসই মাথায় ঘুরছিল। আমি থিসিস জমা করতে পারছি। প্রিন্ট করে গাইড,কোগাইড,সবাইকে দেব। হাসি মুখে ছবি তুলতাম হয়ত অন্য কোনও পরিস্থিতিতে…।’
তবে তিলোত্তমা পারল না। ওঁকে করতে দেওয়া হল না। রুমেলিকার কথায়,’কিছু জানোয়াররা মিলে ওকে করতে দেয়নি। ওকে ডাক্তার হতে দেয়নি। ওকে বেঁচে থাকতে দেয়নি। সেই ভুলতে না দেওয়ার আবেগ থেকে । ভুলে না যাবার একটা ছোট প্রয়াস থেকে। নিজের সাধ্য অনুযায়ী নিজের এমডির থিসিসটা ওর করে দেওয়ার ক্ষুদ্র প্রয়াস একটা ।’