কলকাতা : রাজ্যে নিয়োগের ক্ষেত্রে বেহাল দশার কথা আরও একবার উঠে এল কলকাতা হাইকোর্টে। প্রাথমিকে চাকরি পাওয়া এক ব্যক্তির নিয়োগের চারমাস পর চাকরি বাতিল করে দিয়েছিল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। সেই চাকরি এবার ওই ব্যক্তিকে ফিরিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে মামলাটির শুনানি চলছিল। সেই সময়ই এই নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে বিচারপতি কড়া মন্তব্য করেন, “মানিক ভট্টাচার্যকে টাকা দেননি। তাই হয়ত মামলাকারীর চাকরি বাতিল হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ এমন একটা রাজ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে টাকা না দিলে চাকরি মেলে না।” সেই সঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের আরও প্রশ্ন তোলেন, “চার মাস চাকরি করার পর বাতিল কীভাবে! নিয়ম না থাকলে নিয়োগের আবেদনপত্র গ্রাহ্য হল কীভাবে?”
প্রসঙ্গত, মিরাজ শেখ নামে এক ব্যক্তি মুর্শিদাবাদে প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি পেয়েছিলেন। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রাথমিকে শিক্ষক পদে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু চাকরি পাওয়ার চার মাস যেতে না যেতেই আবার বেকার হয়ে যান তিনি। কারণ, সার্ভিস বুক তৈরির সময় মিরাজ শেখের চাকরি বাতিল করে দিয়েছিল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। বিষয়টি নিয়ে মুর্শিদাবাদ ডিপিএসসি জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক বোর্ডের গাইডলাইন অনুযায়ী, সংরক্ষিত পদের জন্য স্নাতক স্তরে অনার্সে ৪৫ শতাংশের কম নম্বর থাকলে চাকরি করা যায় না। সাধারণ পদের জন্য স্নাতক স্তরে অনার্সে ৫০ শতাংশ নম্বর প্রয়োজন হয়।
তবে আদালতে মঙ্গলবার এনসিটিই জানিয়েছেন, সাধারণ পরীক্ষার্থীদের জন্য কেবল স্নাতকে ৫০ শতাংশ নম্বর এবং সংরক্ষিত পরীক্ষার্থীদের জন্য ৪৫ শতাংশ নম্বর প্রয়োজন হয় প্রাথমিকে চাকরির যোগ্যতা অর্জনের ক্ষেত্রে। এদিকে মামলাকারী মিরাজ শেখের স্নাতক স্তরে প্রাপ্ত নম্বর ৪৬ শতাংশ। কিন্তু এরপরও তাঁর চাকরি বাতিল করা হয়। এরপরই মিরাজ শেখকে দ্রুত বাতিল হওয়া চাকরিতে পুনর্বহাল করার নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সিদ্ধান্তের পর চাকরি হারিয়েছিলেন মিরাজ। তবে প্রায় ৬ মাস পর আবার সেই চাকরিতে মিরাজকে পুনর্বহাল করার নির্দেশ দিল আদালত।