কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে সরকার তথা শাসক দলের বিড়ম্বনা বেড়েছে। জেলে রয়েছেন মন্ত্রী, বিধায়ক। প্রাথমিক থেকে এসএসসি, সব ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের। এরই মধ্যে সেই নিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগ তুলেই মামলা হয় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) বিরুদ্ধে। শুক্রবার সেই মামলা সরাসরি খারিজ করে দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রাথমিকের নিয়োগ দুর্নীতিতে শুভেন্দু অধিকারীর নাম জড়িয়ে একটি মামলা হয়েছিল। সেই মামলাতেই স্বস্তি পেলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক।
অভিযোগ ওঠে, ২০০৯ অর্থাৎ বাম আমলে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের যে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল, তার পরীক্ষা হয় তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১২ সালে। সেই সময় নিয়োগ বোর্ডে শুভেন্দু অধিকারী ছিলেন বলে সম্প্রতি দাবি করেছেন কেশপুরের তৃণমূল বিধায়ক শিউলি সাহা। তিনি দাবি করেন, সেই সময় কীভাবে চাকরি হয়েছে, তা তিনি খুব ভাল করেই জানেন। শিউলির সেই মন্তব্যকে হাতিয়ার করেই একটি মামলা হয় হাইকোর্টে। শুক্রবার ছিল সেই মামলার শুনানি।
এদিন বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, ১৩ বছর পরে হঠাৎ থার্ড পার্টির একটা ভিডিয়ো এনে মামলা দায়ের করা হল কিসের ভিত্তিতে? তাঁর দাবি, যদি বঞ্চিতদের সত্যি কোনও অভিযোগ থাকত তাহলে সেইগুলো নিয়েই তাঁরা আসতে পারতেন হাইকোর্টে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘হঠাৎ ভিডিয়ো দেখার পরে তাঁদের মনে হল তাঁদের বিচার চাই! কোন মতলবে এখন কোর্টে এসেছেন?’
মামলকারীদের আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় আদালতে জানান, শিউলি সাহার একটা বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে। যেখানে তিনি বলছেন, সেই সময় নিয়োগ বোর্ডে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী, তিনি বেআইনি নিয়োগে মদত দিয়েছেন। আইনজীবীর দাবি, পূর্ব মেদিনীপুর একটা আতঙ্ক হয়ে রয়েছে। তাই এতদিন মামলা করতে পারেননি বঞ্চিতরা।
এ কথা শুনে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘প্রার্থীরা ২০০৯ সাল থেকে বঞ্চিত। তাহলে এতদিনে শিউলি সাহার ভিডিয়ো পাওয়া গেল বলে অভিযোগ করতে এলেন কেন?’ বিচারপতির দাবি, যেখানে বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের কোনও অভিযোগ নেই, সেখানে ১৩ বছর পরে একটা ভিডিয়ো নিয়ে এসে এভাবে অভিযোগ করা যায় না। এই বলেই মামলা খারিজ করেছেন তিনি।