কলকাতা: ‘চোরের মুখে জ্ঞানের কথা মানায় না।’ প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী গ্রেফতারির পরই গর্জে উঠলেন টুম্পা কয়াল। বিস্ফোরক মৌসুমী কয়ালও। তিনি বললেন, ‘চুরি করেছেন, জেলে যাচ্ছেন, সেটাই স্বাভাবিক।’ টুম্পা আরও বললেন, ‘পশু খাদ্য় কেলেঙ্কারিতে লালু আর মানুষ খাদ্য কেলেঙ্কারিতে বালু। আমরা আরও কত কী দেখব, জানি না। কেঁচো কেউটে তো বেরিয়েই যাচ্ছে। সাধারণ মানুষের টাকা কীভাবে লুটেপুটে নিতে হয়, এরাই জানে। রাজ্য সরকার তো মানুষের বিচার করতে পারছে না। কিন্তু ওদেরই দল থেকে একে একে চোর ধরা পড়ছে।’
অন্যদিকে, মৌসুমী কয়াল বলেন, “এত পরিমাণ চুরি, গরিব মানুষের খাদ্য চুরি হয়ে গিয়েছে। খাদ্য চুরি করে বিক্রি করে দিচ্ছে। আমাদের রাজ্যে চুরি ছাড়া আর কী রয়েছে। গরু, কয়লা, টাকা সব চুরি গিয়েছে। এবার খাদ্য। এবার জেলে গিয়ে জেলের ভাত খাক।”
বরুণ বিশ্বাসের হত্যা মামলা হোক, কিংবা তারপর ঘটে যাওয়া কামদুনির ধর্ষণকাণ্ড, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ‘জোন’ বারবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বরুণ বিশ্বাসের বাবাও গর্জে উঠেছেন বালুর বিরুদ্ধে। এবার জ্যোতিপ্রিয়র বিরুদ্ধে চাঁচাছোলা আক্রমণ মৌসুমী কয়াল, টুম্পা কয়ালের। শাসকদলের বিরুদ্ধে বারবার মুখ খুলেছেন তাঁরা। সম্প্রতি কামদুনির রায় নিয়ে নতুন করে এলাকায় প্রতিবাদের আগুন জ্বলেছে। এবার সেই এলাকা থেকেই মন্ত্রীর গ্রেফতারিতে প্রতিবাদের সুর জোরাল হচ্ছে। জ্যোতিপ্রিয়কে লালু প্রসাদের সঙ্গেই তুলনা করে ফেললেন টুম্পা কয়াল।
পশু খাদ্য কেলেঙ্কারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন RJD সুপ্রিমো লালু প্রসাদ। ওই মামলায় পঞ্চম অর্থাৎ অন্তিম মামলাতেও দোষী সাব্যস্ত হন তিনি। ডোরান্ডা ট্রেজারি কেস নামে পরিচিত মামলাটি। বেআইনিভাবে ওই ট্রেজারি থেকে ১৩৯.৩৫ কোটি টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি হিসাবে এটিকেই গণ্য করা হয়।
বাংলাতেও রেশন, গরিব মানুষের খাবার নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতিতে যাঁরা জড়িত, তাঁদের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ পাচ্ছেন তদন্তকারীরা। ইডি আধইকারিকরাই বলছেন, এ তো হিমশৈলের চূড়ামাত্র। প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীকে জেরা করে আরও অনেক বড় তথ্য সামনে আসতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা।