কলকাতা : জেলায় জেলায় যখন কার্নিভালের প্রস্তুতি চলছিল, তখন রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের বাড়িতে ইডি-র তল্লাশি ভাল চোখে দেখেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরো বিষয়টাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে বর্ণনা করার পাশাপাশি তৃণমূল সুপ্রিমো এফআইআর করার হুঁশিয়ারি পর্যন্ত দিয়েছিলেন বৃহস্পতিবার দুপুরে। গতকাল, দুপুর আড়াইটা নাগাদ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি, বালুর প্রাণের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেননি। তাঁর এই বক্তব্যের ১২ ঘণ্টা পর ইডি-র হাতে গ্রেফতার হন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। রাত ৩ টে ২২ মিনিটে তাঁকে গ্রেফতার করে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যান ইডি অফিসাররা।
একাধিক নেতা-মন্ত্রীর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে গত এক বছরে। মাঝে মধ্যেই ইডি বা সিবিআই দফতরে ডাক পড়ে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের। তবে বালুকে নিয়ে মমতার গলায় এত উদ্বেগ কেন? তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে গতকালের পর। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, জ্যোতিপ্রিয় গ্রেফতার হতে পারেন, এমন আশঙ্কা তো ছিলই। সেই সঙ্গে তৃণমূল সুপ্রিমোর আশঙ্কা শুধু জ্যোতিপ্রিয়তেই থেমে থাকবে না কেন্দ্রীয় সংস্থা। সে কারণেই কি তড়িঘড়ি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মমতা?
বিরোধীরা এই ক্ষেত্রে সেই তৃণমূল-বিজেপি আঁতাতের তত্ত্বই সামনে আনছেন। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী তো জানতেন। উনি তো দিল্লির সব খবর পান। জেনেশুনেই ওই সব বলেছেন। তাঁর প্রশ্ন, মমতার আশঙ্কা যখন এতটাই বেশি ছিল, তখন সিজিও কমপ্লেক্স ঘেরাও করলেন না কেন? রাস্তায় ধরনায় বসলেন না কেন?”
বৃহস্পতিবার মমতা বলেছিলেন, “বালুর সুগার আছে, ও খুবই অসুস্থ। ও যদি মরে যায় তাহলে বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে হবে, ইডির বিরুদ্ধেও অভিযোগ জানাতে হবে।” এই প্রসঙ্গে সুলতান আহমেদের কথাও মনে করিয়ে দেন মমতা। তিনি দাবি করেন, সিবিআই-এর কাছ থেকে চিঠি পাওয়ার পরই মৃত্য়ু হয়েছিল সুলতান আহমেদের। উল্লেখ্য, পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পর তিনি নাকি একাধিকবার ফোন করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে, কিন্তু কোনও উত্তর আসেনি।