Sonagachi: যখন তখন রেড, খদ্দেরকে তুলে নিয়ে যাওয়া থেকে শৌচালয় সমস্যা, কী চাইছে সোনাগাছি?

TV9 Bangla Digital | Edited By: সৌরভ পাল

Dec 19, 2021 | 11:16 AM

Sonagachi: যৌনকর্মীরা যেন সম্মানের সঙ্গে তাঁদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারে সে বিষয়েও পুরসভার কাছে প্রত্যাশা রাখছে সোনাগাছি। যখন তখন পুলিশের তল্লাশি, খদ্দেরদের তুলে নিয়ে যাওয়ায় পেশার ক্ষতি হয়, পুরসভা যদি এই বিষয়ে বিশেষভাবে নজর দেয়, এই প্রত্যাশাও রয়েছে তাঁদের।

Sonagachi: যখন তখন রেড, খদ্দেরকে তুলে নিয়ে যাওয়া থেকে শৌচালয় সমস্যা, কী চাইছে সোনাগাছি?
অলংকরণ: অভিজিৎ বিশ্বাস

Follow Us

কলকাতা পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ড। চতুর্ভূজ মানচিত্রে এই ওয়ার্ডের ‘সীমানা’ — উত্তরে শ্রী অরবিন্দ সরণি, পূর্বে যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউ, দক্ষিণে ডি ঘোষ সরণি এবং পশ্চিমে রবীন্দ্র সরণি। থানা বড়তলা। পুরভিত্তিক বিভাজনে বোরো ২। বিধানসভা — শ্যামপুকুর।

২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী উত্তর কলকাতার এই ওয়ার্ডে রয়েছে ২২ হাজার ২৬৭ জনের বসতি। আনুপাতিক হিসেবে এখানে মহিলার সংখ্যা ১১ হাজার ৫২৯ (৫২ শতাংশ)। পুরুষ রয়েছে ১০ হাজার ৭৩৮ (৪৮ শতাংশ)। শিক্ষার হার ৮৬ শতাংশ। ১৯৫১ সালের তথ্য অনুযায়ী যা ছিল মাত্র ৫৩ শতাংশ।

রাজ্যে পালাবদলের সঙ্গে এই ওয়ার্ডেও জয়ী হয় তৃণমূল। ২০১৫ সালে জোড়াফুল ফোটান তৃণমূল প্রার্থী সুনন্দা সরকার। একুশেও তিনিই প্রার্থী। তাঁর বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বাম প্রার্থী শ্রাবণী চক্রবর্তী এবং বিজেপির অনুরাধা সিং।

১৯ ডিসেম্বর কলকাতায় পুরভোট। কী প্রত্যাশা এই ওয়ার্ডের পুরবাসীদের? মূলত পরিস্রুত পানীয় জলকেই সর্বাধিকার দিচ্ছেন ভোটাররা। তবে প্রত্যাশা রয়েছে আরও শৌচালয়েরও।

বিশেষ করে এশিয়ার সবথেকে বড় যৌনপল্লীর কর্মীদের দাবি, ‘সোনাগাছিতে আরও শৌচালয় হোক।’ একই সঙ্গে তাঁদের দাবি আরও জলের কল বসিয়ে পানীয় জলের সমস্যা মিটিয়ে দিক পুরসভা। এছাড়াও পেশায় নিযুক্ত কর্মীদের রেশন কার্ড করে দেওয়ার বহুদিনের দাবি আরও একবার প্রত্যাশার আকারে তুলে ধরছেন তাঁরা।

অলংকরণ: অভিজিৎ বিশ্বাস

পুরপ্রত্যাশার কথা জানিয়ে দুর্বারের ‘মেন্টর’ ভারতী দে TV9 বাংলাকে বলেন, “ঘরে ঘরে বাথরুম না থাকার ফলে শৌচকর্মের জন্য একতলা থেকে তিন তলা পর্যন্ত যেতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে আবার চার তলা থেকে নেমে আসতে হয় একতলায়। যা শৌচালয় রয়েছে, তা একেবারেই পর্যাপ্ত নয়। আরও শৌচালয়ের প্রয়োজন।”

কলকাতার আরও একাধিক ওয়ার্ডের মতো এই ওয়ার্ডেও রয়েছে পানীয় জলের সমস্যা। ভারতী দের কথায়, “সকাল থেকে টাইম ভাগ করে ১০ মিনিটের মধ্যে মেয়েদের জল নিতে হয়। শৌচালয়ের সঙ্গে এই সমস্যারও সমাধান চাইছি আমরা।”

একই সঙ্গে যৌনকর্মীরা যেন সম্মানের সঙ্গে তাঁদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারে সে বিষয়েও পুরসভার কাছে প্রত্যাশা রাখছে সোনাগাছি। যখন তখন পুলিশের তল্লাশি, খদ্দেরদের তুলে নিয়ে যাওয়ায় পেশার ক্ষতি হয়, পুরসভা যদি এই বিষয়ে বিশেষভাবে নজর দেয়, এই প্রত্যাশাও রয়েছে তাঁদের।

সোনাগাছিতে এখন গড়ে ১০ হাজার যৌনকর্মী প্রতিদিন কাজ করছেন। এদের ৮০ শতাংশেরই ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, রেশন কার্ড রয়েছে। বাকিরাও যেন নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন, সেজন্য অবশিষ্ট ২০ শতাংশেরও রেশন, আধার, ভোটার কার্ডের প্রত্যাশা রাখছে সোনাগাছি।

অলংকরণ: অভিজিৎ বিশ্বাস

শুধু সোনাগাছিই নয়, বউবাজার, কালীঘাটের মতো যৌনপল্লীতেও এই একই ধরনের সমস্যার সমাধানের প্রত্যাশা রাখছেন যৌনকর্মীরা।  এই পেশায় রয়েছেন এমন এক যৌনকর্মীর কথায়, “পেশার তাগিদে অনেকেই সোনাগাছিতে আসেন। গ্রামে তাঁদের রেশন কার্ড থাকলেও সেটা দিয়ে এখানে রেশন পাওয়া যায় না। কলকাতায় রেশন পাওয়ার সহজ বন্দোবস্ত করে দিলে মেয়েদের সুবিধাই হবে।”

অলংকরণ: অভিজিৎ বিশ্বাস

করোনা পরিস্থিতিতে অনেকেই কাজ হারিয়ে এই পেশায় এসেছেন। আবার এই পেশাতেই অনেকে কাজ হারিয়েছেন। খদ্দের নেই। বাজারে মন্দা। সরকারের তরফে চাল, ডাল, তেল সহ নিত্য প্রয়োজনীয় যে সামগ্রী দেওয়া হয়েছে সেই পরিষেবা আরও অন্তত ৬ মাস কার্যকর করার কথাও প্রত্যাশার তালিকায় নথিভুক্ত করছে সোনাগাছি।

Next Article