কলকাতা: পাকা বাড়ি থাকলে কোনওভাবেই আবাস যোজনায় (PMAY) বাড়ি পাওয়া যাবে না। নাম উঠলে তা দ্রুত বাতিলের নির্দেশ মুখ্যসচিবের। একইসঙ্গে কোনও প্রভাবশালীর প্রভাব খাটানো চলবে না বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দেন তিনি। মঙ্গলবার নবান্নে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক থেকে এই নির্দেশ দেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সূত্রের খবর, আবাস যোজনা নিয়ে বৈঠক শেষে মালদহ, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কোচবিহার, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা-সহ বেশ কয়েকটি জেলার পারফরম্যান্স নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যসচিব। এদিন নবান্নে পঞ্চায়েত দফতরের সচিব এবং শীর্ষ আধিকারিক, জেলাশাসকদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন মুখ্যসচিব হরেকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সেখানে তিনি বলেন, পাকা বাড়ি রয়েছে এমন উপভোক্তা কোনওভাবেই আবাস যোজনার বাড়ি পাবেন না। যদি নাম উঠে থাকে দ্রুত তা বাতিল করার নির্দেশ দেন তিনি। সূত্রের খবর, একইসঙ্গে তিনি নির্দেশ দেন, কোনও প্রভাবশালীর কথা শুনে চলা যাবে না। যেখানে যেখানে ঝামেলা হচ্ছে, সেখানে সেখানে জেলাশাসকদের যেতে নির্দেশ দেওয়া হয় বলেও সূত্রের দাবি।
একইসঙ্গে নির্দেশ দেওয়া হয় কোথাও কোনও আইনশৃঙ্খলার অবনতির খবর পেলে সঙ্গে সঙ্গে নবান্নের জানাতে হবে। জেলা পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করার বার্তাও দেন মুখ্যসচিব। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জেলায় নিয়ম-কানুন মানা হয়নি। কেন নিয়ম-কানুন মানা হয়নি উপভোক্তাদের তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে, জেলা শাসকদের কাজে ক্ষুব্ধ মুখ্য সচিব। সূত্রের খবর, এদিন হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, প্রকল্প সংক্রান্ত যা নিয়ম কানুন রয়েছে, তা মানতেই হবে। যে উপভোক্তারা বেআইনিভাবে বাড়ি পেয়েছেন, তাঁরা কোনও রাজনৈতিক দলের কি না বা কোনও প্রভাব খাটাচ্ছেন কি না তাও নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করতে বলেন বলে দাবি সূত্রের। কোথাও কোনও রকম প্রভাব খাটানোর চেষ্টা হলে পুলিশ সুপার যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবেন বলে জানান মুখ্যসচিব।
নবান্ন সূত্রে খবর, এদিনের বৈঠক থেকে মুখ্যসচিবের বার্তা, স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। সঠিক উপভোক্তাদের তালিকা তৈরি করতে হবে। প্রয়োজনে প্রতিটি ব্লক অফিসারের সঙ্গে বৈঠক করতে হবে। কোথায় কোথায় ত্রুটি হয়ে রয়েছে তা খুঁজে বের করার কথাও বলেন তিনি। গ্রামীণ উন্নয়নের বিভিন্ন প্রকল্পে বরাদ্দ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে দীর্ঘদিন টানাপোড়েন চলেছে রাজ্যের। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ৮২০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে ১১ লক্ষ গ্রামীণ আবাস নির্মাণের লক্ষ্যে। এরপরই আবাস বণ্টনে বিশেষ পর্যবেক্ষক দল তৈরি করে নবান্ন। আবাস বণ্টনের কাজ নির্ভুলভাবে করতে ২১ জন উচ্চপদস্থ আধিকারিক নিয়োগও করা হয় নবান্নের তরফে। যাঁদের মধ্যে রাখা হয়েছে আইএএস পদমর্যাদার ৩ জন অভিজ্ঞ আধিকারিককে।
একইসঙ্গে জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, প্রতিটি জেলায় যে আশা কর্মী এবং অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী সমীক্ষার কাজ করছেন, তাঁদের পর্যাপ্ত এবং প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। এ ব্যাপারে জেলাশাসকরা যেন পুলিশকে নিজ নিজ জেলায় যাবতীয় দায়িত্ব ন্যস্ত করেন।