কলকাতা: আলিপুরের (Alipur) অরফ্যানগঞ্জ থেকে শুরু হল বিজেপির পদযাত্রা। রয়েছেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায়, অর্জুন সিংরা। তবে ‘প্রত্যাশিতভাবেই’ দেখা মিলল না শোভন চট্টোপাধ্যায়ের। বৈশাখী যে থাকবেন না, তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন।
খিদিরপুরে মিছিল পৌঁছতেই শুরু হয় ফুলবৃষ্টি।
প্রথমে রুট নিয়ে সমস্যা, পরে অতিরিক্ত গাড়ি ও বাইকের কারণে যানজটের সম্ভাবনা দেখিয়ে মেলেনি অনুমতি। অনেক আলোচনায় পুলিস প্রশাসনের তরফে নির্ধারিত করে দেওয়া হয় রুট। প্রশাসনের নির্দেশে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মিছিল হবে হেঁটে, থাকবে না বাইক, গাড়ি। এসব যখন ঠিক হচ্ছে আলিপুর চত্বরে পৌঁছে গিয়েছিলেন মুকুল রায়, অর্জুন সিং, লকেট চট্টোপাধ্যায়, কৈলাস বিজয়বর্গীয়রা। কিন্তু যাঁর রোড শো ছিল, অর্থাৎ সেই শোভনেরই দেখা মেলেনি বেলা তিনটে পর্যন্ত। বিজেপি নেতৃত্বও এপ্রসঙ্গে মুখ খুলতে চাননি।
বস্তুত রবিবারই বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, তিনি রোড শো-তে থাকছেন না। তাঁর বক্তব্য, দল তাঁকে ইঙ্গিত দিয়েছে এই রোড শো কেবল শোভনেরই। বৈশাখীর না থাকার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই জল্পনা শুরু হয়, তবে কি শোভন আদৌ মিছিলে থাকবেন। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা যুক্তি খাঁড়া করেছে তাঁদের পূর্বে নানা বিষয়ে সিদ্ধান্তকেই।
উল্লেখ্য,২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পর ১৪ অগস্ট বিজেপিতে যোগ দেন শোভন-বৈশাখী। তারপর রাজ্য বিজেপির সদর দফতরে সংবর্ধনা নিতে গিয়ে সাংগঠনিক বৈঠকে শোভনকে ডাকা হলেও, ব্রাত্য ছিলেন বৈশাখী। অভিমান হয় বৈশাখীর। শোভনও ক্ষুব্ধ হন বিজেপি নেতৃত্বের ওপর। মানভঞ্জনে এগিয়ে আসেন মুকুল। দলে যোগ দেওয়ার বছর দেড়েক পর্যন্ত এভাবেই চলে শোভন-বৈশাখীর মান অভিমানের খেলা। এর আগেও বৈশাখীর ‘মান’ রক্ষার্থে শোভন দলের একাধিক সিদ্ধান্তকে গ্রহণ করেননি। শোভনের ‘প্রাক্তন’ স্ত্রী রত্না আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেই ফেলেছিলেন, “আগে না হয় ফ্ল্যাট থেকে নেমে গাড়িতে ওঠুন, তারপর বিশ্বাস করা যাবে। অনেক খেলাই তো দেখলাম।” রত্নার সেই কথাই যেন হাড়ে হাড়ে প্রতিফলিত হল এদিনের মিছিলে। তবে শোভন-বৈশাখীর এই মান অভিমানে যে এবার বিরক্ত নেতৃত্ব, তা স্পষ্ট রাজনৈতিক মহলের কাছে।