কলকাতা: “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হবেন, এটা না বললে তৃণমূলে থাকা যাবে না।” সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া অর্জুন সিং-কে কটাক্ষ করতে গিয়ে বললেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। রোজকার মতই সোমবার সকালে নিউটাউনে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছিলেন দিলীপ। বঙ্গ রাজনীতিতে টাটকা ইস্যু অর্জুন সিংয়ের ঘরওয়াপসি প্রসঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। অর্জুন সিং রবিবার তৃণমূলে যোগ দিয়েই বলেছিলেন, চব্বিশের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চান তিনি। সেই প্রসঙ্গ টেনেই দিলীপ ঘোষ বলেন, “বিজেপি বিশ্বের সবচেয়ে বড় দল। এটা ঠিক যাঁরা আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করেন না, তাঁদের পক্ষে বিজেপিতে থাকা মুশকিল।” দিলীপ ঘোষের আরও সংযোজন, “যাঁরা আদর্শ নীতি কার্যপদ্ধতি মেনে চলেন, তাঁদের পক্ষে বিজেপি ঠিক এবং যাঁরা টিএমসি ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছেন, তাঁদের পক্ষে থাকাটা খুব কঠিন । মানিয়ে নিয়ে চলতে হবে। যাঁরা করছেন, তাঁরা রয়েছেন। যাঁরা পারছেন না, তাঁরা চলে যাচ্ছেন।”
প্রসঙ্গত গত কয়েক দিন ঘরেই ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংয়ের ঘরওয়াপসির প্রসঙ্গটা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে। গত কয়েকদিন ধরে দফায় দফায় বেসুরো হয়েছেন অর্জুন সিং। করেছেন একের পর এক ইঙ্গিতপূর্ণ টুইট। দিন যত এগিয়েছে, দল বদলের জল্পনা বেড়েছে ততই। ২০১৯ সালের শুরুর দিকে লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন অর্জুন সিং। ব্যারাকপুরের সাংসদ হন তিনি। সম্প্রতি পাটশিল্প নিয়ে কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর স্নায়ুযুদ্ধ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের চোখে অর্জুনের স্ট্র্যাটেজি অত্যন্ত স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ‘বিদ্রোহী’ অর্জুনের ঘরে ফেরা যে সময়ের অপেক্ষা, তা স্পষ্ট হতে থাকে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের কাছেও।
অবশেষে রবিবারই অর্জুন ঘোষণা করেন, ‘কাউন্টডাউন শুরু…’। আর বলার অপেক্ষা থাকে না। রবিবার ক্যামাক স্ট্রিটে তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরীয় পরিয়ে দিলেন অর্জুন সিংয়ের গলায়। ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অর্জুনের বৈঠকের সময় ছিলেন রাজ চক্রবর্তী, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও।
অর্জুন সিংয়ের ঘরওয়াপসি নিয়ে চরম কটাক্ষ করেছেন বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা তথাগত রায়। তাঁর বক্তব্য, “মমতা, আপনি বিজেপির ভিতরে ট্রয়ের ঘোড়া ঢুকিয়ে দিতে সফল হয়েছেন।” অর্জুনের ঘরওয়াপসি প্রসঙ্গে কৈলাস, দিলীপ, শিবপ্রকাশ, অরবিন্দদের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন দিলীপ ঘোষ। রবিবার কিছুটা বিরক্তি প্রকাশ করেই তথাগত রায় লিখেছেন, “এবার বাকিদেরও নিয়ে নিন। সঙ্গে কেডিএসএ-কেও নিয়ে নিন। আপনি এখন মুখ্যমন্ত্রী। আর কী চাই আপনার?”
এই বিষয়টিকেও চরম কটাক্ষ করেছেন দিলীপ ঘোষ। রবিবার তাঁকে এই প্রশ্নের সম্মুখীনও হতে হয়। তথাগত রায়কে বিঁধে দিলীপ ঘোষের চরম কটাক্ষ, “পার্টিতে তথাগত রায় থাকলে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রয়োজন নেই।”