কলকাতা: বাড়িতে বেশিরভাগ সময়ে থাকতেনই না তিনি। বাবা প্রশ্ন করলে জানাতেন বাইরে কাজে যাচ্ছি। ভুয়ো ই়়ডি অফিসার পরিচয় দিয়ে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনকে প্রতারণার চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার চন্দন রায়ের বাবার কথায় চাঞ্চল্যকর তথ্য।
দমদম গোরক্ষা বাঁশি রোডের বাসিন্দা চন্দন। বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। ভুয়ো পরিচয় দিয়ে একাধিক তৃণমূল নেতাকে ফোন করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। সম্প্রতি শান্তনু মিত্র পরিচয় দিয়ে তিনি ফোন করেন তৃণমূল সাংসদ চিকিত্সক শান্তনু সেনকে।
তৃণমূল সাংসদের বয়ান অনুযায়ী, এক ব্যক্তি তাঁকে ফোন করে নিজেকে ইডি অফিসার পরিচয় দেন। শুধু তাই নয়, সেই পরিচয় ভাঙিয়ে মোটা টাকাও দাবি করা হয় তাঁর কাছ থেকে। ইডি সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজে সাংসদকে সাহায্য করবেন বলেও ফোনে জানিয়েছিলেন চন্দন। খটকা লাগায় লালবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সাংসদ। তারপর গোটা ঘটনা প্রকাশ্যে আসে।
তদন্তকারীরা বলছেন, প্রতারণার যে ধরনটা এখন দেখা যাচ্ছে, সেটা সাম্প্রতিক কয়েক বছরে বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। এর আগেও ভুয়ো সিবিআই আধিকারিক সেজে প্রতারণার চেষ্টার অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। সিবিআই কর্তা সেজে কসবার এক ব্যবসায়ীকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। ভুয়ো ইডি অফিসার পরিচয় দিয়েও প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে একাধিক। তার একটি মামলা বর্তমানে সিআইডি তদন্ত করে দেখছে। প্রথমে সেটির তদন্ত শুরু করেছিল বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ।
দেখা গিয়েছে, রাজ্যে মূলত চিটফান্ড মামলার তদন্ত শুরু হওয়ার পর থেকেই প্রতারকরা ইডি, সিবিআইকে সামনে রেখে তাঁদের জাল বিছিয়েছে। কারণ এই মামলাগুলির তদন্তে আরও বেশি করে সক্রিয় হয়েছে ইডি-সিবিআই। এই ‘মোডাস অপারেন্ডি’র সূত্র ধরেই ভুয়ো সিবিআই কৌসুলী সনাতন রায় চৌধুরীর কীর্তি প্রকাশ্যে এসেছে। এই তালিকায় নবতম সংযোজন চন্দন রায়।
সাংসদের মনে হয়েছিল, যে ভাবে ইডি আধিকারিকরা নিজেদের পরিচয় দেন, যে ধরনের কথা বলেন, তাতে কোথাও একটা অমিল ছিল শান্তনু মিত্র নামে পরিচয় দেওয়া যুবকের কথাবার্তায়। সেখানেই খটকা লাগে সাংসদের। তিনি বিষয়টি লালবাজারে জানান। তদন্তে নেমে দেখা যায়, শান্তনু মিত্র নামে পরিচয় দিয়ে ফোন করা যুবকের আসল নাম চন্দন। আর তাঁর সঙ্গে ইডি-র দূরদূরান্তে কোনও সম্পর্কই নেই। তবে ধৃতের বাবা স্পষ্ট জানিয়েছেন, ছেলে অন্যায় করলে তার সাজা হওয়াই উচিত! আরও পড়ুন: এবার ভুয়ো ইডি কর্তা! প্রতারণার শিকার খোদ তৃণমূল সাংসদ