কলকাতা: জেহাদি শাসনে বিধ্বস্ত ‘কাবুলিয়ালার দেশ’। এবার তত্পর নবান্নও। আফগানিস্তানে কোথাও কোনও বাঙালি আটকে রয়েছেন কিনা, তা জানতে এবার নবান্নের তরফে জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নবান্নের তরফে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে বাংলার কেউ সঙ্কটে পড়েছে কিনা, জেলাশাসকরা যেন তা জানার চেষ্টা করেন। এবং সেই ব্যক্তি নাম ও ঠিকানা সংগ্রহ করে জমা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। তবে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত শেষ পাওয়া খবরে কাবুলে বাংলার কারোর আটকে থাকার খবর মেলেনি।
এই মুহূর্তে সব ভারতীয়কে আফগানিস্তান থেকে নিরাপত্তার সঙ্গে দেশে ফেরাতে তত্পর দিল্লি। বাংলার কোনও ব্যক্তি কাবুলে আটকে পড়েছেন, এই সংক্রান্ত কোনও তথ্য যদি পরিবারের সদস্যরা জেলাশাসক কিংবা সংশ্লিষ্ট থানায় জানান, তাহলে দ্রুত এব্যাপারে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই ব্যক্তির নাম ঠিকানা-সহ বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে দিল্লিতে জানানো হবে।
শুধু তাই নয়, বাংলাতেও যদি কোনও আফগান থাকেন, তাঁদের নিরাপত্তা ও সুবিধা-অসুবিধার দিকে নজর রাখতে বলা হয়েছে। ব্যবসার সূত্রে কলকাতা শহরের বুকেও বহু আফগান নাগরিক বসবাস করেন। তবে দেশে তাঁদের আত্মীয়দের নিরাপত্তার কথা ভেবে ঘুম উড়েছে তাঁদের চোখে। তাঁদের যদি কোনও সাহায্যের প্রয়োজন হয়, সে ব্যাপারে তত্পর থাকার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। এরই মধ্যে আফগানিস্তান থেকে বায়ুসেনার বিমানে দেশে ফিরেছেন ভারতের ১২০ জন আধিকারিক। কর্মসূত্রে আফগানিস্থানে গিয়ে কেউ আটকে পড়েছেন কিনা, তা সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। নবান্নও গোটা বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত তত্পর।
সূত্রের খবর, আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিয়মিত দেশের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত কাবুল থেকে বিমানের উড়ান নিয়ে সমস্ত আপডেট নেন। ভারতের যে সমস্ত নাগরিক এখনও আফগানিস্তানে আটকে রয়েছেন,তাঁদের কী ভাবে সুরক্ষিত ভাবে ফেরানো যায় তা নিয়ে অনবরত চেষ্টা করছে দিল্লির সরকার।
সোমবার প্রথম দফায় কাবুল থেকে ভারতে ফিরিয়ে আনা হয় ৪৫ জন ভারতীয়কে। সোমবার দুপুরে ভারত থেকে কাবুলের উদ্দেশে সি-১৭ গ্লোবমাস্টার উড়ে গেলেও বিমানবন্দরের পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকায় আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশ তাজিকিস্তানে অবতরণ করানো হয় বিমানটি। মার্কিন সেনা বিমানবন্দরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পর সে দেশের মাটিতে নামে ভারতীয় বিমান। রাতের মধ্যেই ফিরিয়ে আনা হয় ৪৫ জন ভারতীয়কে।
বিমানবন্দরে আসার পথেই তালিবান সমর্থকদের বাধার মুখে পড়তে হয় ভারতীয়দের। বিমানবন্দরে প্রবেশ করার আগে তাদের হাত থেকে ব্যাগগুলি ছিনিয়ে নেওয়া হয়। বহু প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে দেশে ফেরে প্রথম বিমানটি। দ্বিতীয় বিমানটি মঙ্গলবার সকালে ফেরে ১২০ জন যাত্রীকে নিয়ে। আরও পড়ুন: তালিবানের কাছে কখনওই মাথা নোয়াব না, ঘোষণা আফগানিস্তানের ‘কেয়ারটেকার প্রেসিডেন্ট’ আমরুল্লাহ সালেহর