কলকাতা: সোমের দুপুর থেকে বুধের মধ্যরাত। দেড়দিনের ড্রামা-দুর্ভোগের পর শেষমেশ ঘেরাওমুক্ত কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ। ছাত্র সংসদ ভোট সহ ৩ দফা দাবি। দুপুর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে অধ্যক্ষ, অধ্যাপকদের ছাড়লেন ডাক্তারি পড়ুয়ারা। দাবি পূরণ না হলে অনশনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সোমবার থেকে টানটান নাটক কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে লাগাতার ঘেরাও-বিক্ষোভ!! ডাক্তারি পড়ুয়াদের ঘেরাওয়ে আটকে পড়েন অধ্যক্ষ সহ বিভিন্ন বিভাগের প্রধান ও অন্য অধ্যাপকরা। হাসপাতালজুড়ে চরম অচলাবস্থা তৈরি হয়। হয়রানির শিকার হতে হয় রোগীদের। বাচ্চা কোলে এক মহিলাকে বলতে শোনা যায়, “তোমরা চেনো না আমাদের। আমারা কিন্তু কেস করে দেব। তোমরা এমনটা করতে পার না। বাচ্চা খাচ্ছে না, শরীর খারাপ, ওকে দেখবে না…” ধৈর্য্যের বাধ ভাঙে রোগীর আত্মীয়দেরও। তৃণমূল নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “অসংখ্য রোগী।সেখানে জরুরি পরিষেবা চালু রেখে প্রতিবাদের জায়গা রয়েছে।”
বুধবার রাত দেড়টা নাগাদ সাংবাদিক সম্মেলন করে বিক্ষোভকারী ছাত্ররা জানিয়ে দেন, আপাতত ঘেরাও তুলে নিচ্ছেন। দুপুর দুটো পর্যন্ত সময়সীমা বেধে দিয়েছেন। তার মধ্যে কর্তৃপক্ষ ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ সুনিশ্চিত করা-সহ তিনটি দাবি মেনে না নিলে আমরণ অনশনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। তৃতীয় বর্ষের ছাত্র অনিকেত ধর বলেন, “আমরা অবস্থান তুলে নিচ্ছি। দুপুর ২টো পর্যন্ত সময় আছে। ২২ তারিখ নির্বাচনের যে তারিখ দিয়েছিলেন, প্রিন্সিপ্যাল রুমে আমাদের খুনের যে হুমকি দেওয়া হয়েছে, তার তদন্ত চাই। দাবি না মানলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে। আমরা আমরণ অনশন পথে যাব।”
ছাত্রদের ঘেরাও-বিক্ষোভে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অধ্যক্ষের ঘরে আটকে থেকে রবীন্দ্রনাথ, অতুলপ্রসাদের গানের সুরে তাল মিলিয়েছিলেন অধ্যাপক, চিকিত্সকরা। দিনভর ঘেরাওয়ের ধকল। রাতে প্রিন্সিপালের অফিসের মেঝেতেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন অনেকে। অবশেষে মধ্যরাতে মুক্তি।
ঘেরাও তো উঠল। কিন্তু জট কি কাটবে? ছাত্রদের দাবি কি মেনে নেবে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ? নাকি ছাত্রদের অনশনে আবারও ব্যাহত হবে পরিষেবা? আবারও চিকিত্সার জন্য এসে চরম দুর্ভোগের শিকার হবেন দূর-দূরান্তের জেলা থেকে আসা আমআদমি? প্রশ্ন তো উঠছেই…