কলকাতা: ওদিকে অফিসে দেরি হচ্ছে, কিন্তু ভিড়ে ঠাসা নন- এসি মেট্রোয় উঠতে চান না। অপেক্ষা পরের এসি-মেট্রোটার। অফিস টাইমে অন্তত একটু আরামে দাঁড়িয়ে পৌঁছনো যাবে গন্তব্যে, এটুকুই চাওয়া। অবশেষে সেই দিন শেষ হল। কলকাতা মেট্রো (Kokata Metro) থেকে চির বিদায় নিচ্ছে নন- এসি রেক। কলকাতা মেট্রোর ৩৭ তম জন্মদিনে এমনই সিদ্ধান্ত নিল কর্তৃপক্ষ।
১৯৮৪ সালের ২৪ অক্টোবর। সারা দেশের মধ্যে প্রথম কলকাতাতেই শুরু হয়েছিল বিস্ময়ের পাতাল রেল। ভূগর্ভস্থ রেল পথের বুক চিরে ছুটে যাওয়া সেই রেক-গুলো অনেকবার রং বদলেছে। কখনও আকাশি নীল রঙের, কখনও বা হলুদ–লাল, আবার সাদা–কালো রঙের মেট্রো ট্রেনে চড়েছে কলকাতা তথা রাজ্যের মানুষ। এবার ৩৭ তম জন্মদিনে আরও আধুনিক হল কলকাতা মেট্রো। রবিবার থেকেই বাতিলের খাতায় নাম লেখাল নন- এসি রেক।
রবিবার সকালে গীতা পাঠের মধ্যে দিয়ে চিরবিদায় জানানো হল নন-এসি রেককে। কলকাতা মেট্রোর ৩৭তম প্রতিষ্ঠা দিবসে এভাবেই চিরবিদায় জানানো হল নর্থ-সাউথ করিডরে দীর্ঘদিন পরিষেবা দেওয়া শেষতম নন-এসি রেকটিকে। এই উপলক্ষে রবিবার মহানায়ক উত্তম কুমার মেট্রো স্টেশন বা টালিগঞ্জে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বাতিল হতে চলা নন-এসি রেকের মধ্যে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সেই ট্রেনের মধ্যে ছিল মেট্রোর পিছনে ফেলে আসা ইতিহাসের কথা। ছিল বর্তমান ও আগামী দিনের কর্মকাণ্ড এবং ছবির প্রদর্শনী। অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরলেন কর্মীরা। যাঁরা এই নন-এসি রেক দিয়ে মেট্রো পরিষেবা দেওয়া শুরু করেছিলেন। সব মিলিয়ে জন্মদিনে স্মৃতিমেদুর কলকাতা মেট্রোর কর্মীরা।
প্রসঙ্গত, প্রথম দফায় চেন্নাই থেকে কলকাতায় এসেছিল ৯টি নন-এসি রেক। নয়ের দশকের মধ্যভাগে আরও ৯টি নন-এসি রেক পৌঁছয় সেই চেন্নাই থেকে। ২০১২ সাল পর্যন্ত প্রতিদিন কয়েক লক্ষ যাত্রীকে নিয়ে দমদম থেকে সেই কবি সুভাষ স্টেশন অবদি ছুটে গিয়েছে একের পর এক নন এসি-রেক। তার পর ২০১২ সাল। যাত্রীরা প্রথমবার মেট্রো রেলে উঠে পেল হিমেল হাওয়ার পরশ। যাত্রাপথ হল স্বস্তির। যাত্রীদের চাহিদা মেনেই এবাবেই প্রবেশ ঘটল এসি-রেকের। আর তাদের পরিষেবায় ধীরে ধীরে নোয়াপাড়া কারশেডের সাইড লাইনে চলে গেল নন-এসি মেট্রো রেক।
এবার সে সব অতীত। কলকাতা মেট্রো থেকে বিদায় জানানো হল নন- এসি মেট্রো রেককে। রিটায়ার্ডের পর মাঝে মধ্যে অবশ্য এমারজেন্সি ডিউটিতে বেরোতে হতে পারে নন-এসি রেককে। করোনার জেরে দীর্ঘদিন মেট্রো রেল পরিষেবা বন্ধ ছিল কলকাতায়। তার পর প্রথমে ই-পাস কিংবা স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত যাত্রী নিয়েই দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত ছুটে চলছে মেট্রো। তবে ২০২০ সালের শেষদিকে এই রুটে নন–এসি রেক পরিষেবা কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে জরুরি প্রয়োজনে বের করা হবে এই নন-এসি মেট্রোকে। আপাতত জন্মদিনে বিশ্রামে পাঠানো হল নন-এসি রেককে।
আরও পড়ুন: Newtown Pornography Case: ১০ মাসের ব্যবধান, কলকাতার পর্নোগ্রাফি চক্রের মূল পাণ্ডে অবশেষে গ্রেফতার