কলকাতা: শহর কলকাতার বুকে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। বৃষ্টি হলেই বিপর্যয়। জল জমে তড়িদাহত হয়ে মৃত্যুতে কিছুতেই আর লাগাম পরানো যাচ্ছে না। একের পর এক দুর্ঘটনা। এবার হরিদেবপুর। পড়তে বেরিয়ে আর ঘরে ফেলা হল না ১২ বছরের কিশোরের। নীতীশ যাদব নামে ওই কিশোরকে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে জানান চিকিৎসকরা। নীতীশ পরিবারের একমাত্র ছেলে। বাবা বাইরে থাকেন। মা হরিদেবপুরে থাকেন ছেলেকে নিয়ে। রবিবার সন্ধ্যার ঘটনায় পাগলের মতো কেঁদে চলেছেন মা আরতি যাদব। কখনও বুক চাপড়াচ্ছেন, কখনও আবার পাগলের মতো এদিক ওদিক হাঁটছেন। মর্মান্তিক এই দৃশ্য।
একটি সিসিক্যামেরার ফুটেজ ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে। চোখে দেখা যাচ্ছে না সে ছবি। হরিদেবপুর থানা এলাকার ৩৪/বি হাফিজ মহম্মদ ইশাক রোডের বাসিন্দা নীতীশ গোড়ালির উপরে ওঠা জল ঠেলতে ঠেলতে এগোচ্ছিল। হাতে দুলছিল একটি সাদা প্যাকেট। এভাবেই কিছুটা যেতেই ঠিক ওই বিদ্যুতের খুঁটির সামনে তার পায়ে কী যেন একটা লাগে। ওটাই বোধহয় মারণ ফাঁদ ছিল। ছেলেটি এরপরই রাস্তার ধারের ওই বিদ্যুৎ খুঁটিটি ধরে পা দেখবে বলে মনস্থির করেছে। তাতে হাত ছোঁয়াতেই হুড়মুড়িয়ে গিয়ে পড়ে জলে। এরপর…। হয়ত তখনই সব শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিংবা কিছু পরে।
নীতীশের মা বলেন, “ওকে পড়তে পাঠিয়েছিলাম। রাস্তায় জল জমে গিয়েছে জানি না তো। কারেন্টে শক খেয়েছে। রোজ যায় পড়তে। আমাকে একজন বলছে ওখানে কার ছেলে পড়ে আছে। শুনেই তো আমার হয়ে গেছে। আমি বললাম, এক্ষুণি তো ছেলেটাকে পাঠালাম। ছুটে গেছি আমি। আমাকে তখন আর কেউ যেতে দিচ্ছে না। ওখানে সবাই ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে। প্রায় এক ঘণ্টা পর লাইট অফ করেছে। তারপর ওকে সরিয়েছে। আমি জানিও না ও মরে গেছে না বেঁচে আছে।”
যে গৃহশিক্ষিকার কাছে পড়তে যাচ্ছিল নীতীশ, ঘটনার পর তিনিও বেরিয়ে আসেন। তিনি জানান, খুব ভাল ছাত্র নীতীশ। সেন্ট মেরি স্কুলে পড়ত। এখন ব্রজমোহনে পড়ে। সেখানেও খুব ভাল রেজাল্ট করে। তবে ওই শিক্ষিকা জানান, শনি-রবিবার তাঁর ছুটি থাকে। অন্য কোনও কারণে হয়ত সে আসছিল।